পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RąS বাংলার পুৱালারী মহুয়ার পথের চিহ্ন এইরূপ উদভ্ৰান্ত ভাবে নদের ঠাকুর পথচারীদিগকে, তরুলতা ও আকাশের পাখীগুলিকে সম্বোধন করিয়া প্ৰলাপ বকিতে বকিতে চলিয়া যাইতে লাগিলেন। বৃষ্টি বাদল মাথার উপর দিয়া চলিয়া যাইতেছে, হয়ত বড় বড় গাছ আছে, তাহার তলায় যাইয়া দাড়াইলে জল হইতে আত্মরক্ষা চলে ; কিন্তু নদের চাদ তথায় যাইতেন না ; রৌদ্রে মাথা পুড়িয়া গেলেও সে দিকে খেয়াল ছিল না। কিন্তু তাহার দৃষ্টি প্রখর ছিল, সহসা উচ্চ একটা প্ৰান্তর ভূমি দেখিয়া তিনি বসিয়া পড়িলেন তাহার একমাত্র লক্ষ্যের দিকে। তিনি দেখিলেন মাটির ডেলা দিয়া উনুন তৈরী আছে, রন্ধনের কালিমাখা সেই উনুন দেখিয়া বুঝিতে পারিলেন, মহুয়া তথায় বসিয়া রান্না করিয়াছে। নদের চাঁদ সেখানে বসিয়া কঁাদিতে লাগিলেন ; ঘোড়ার খুরের দাগ আছে, —অদূরে শ্যাম-দুর্বার সল্পাচ্ছন্ন প্ৰান্তরে অৰ্দ্ধভুক্ত দর্ভাস্কুর দেখিয়া বুঝিলেন, সেখানে বেদেদের ছাগলে ঘাস খাইয়াছে, সেই সকল চিহ্ন দেখিয়া বুঝা গেল, বেদেরা ফান্তন ও চৈত্র মাসে সেই জায়গায় ছিল। “সেইখানে বসিয়া কন্যা করেছে। রন্ধন । তথায় বসি নদের ঠাকুর জুড়িল ক্ৰন্দন ॥ ঘোড়ার পায়ের খুরের দাগ, ছাগলে খাইত ঘাস। এই গানে আছিল কন্যা ফান্তন চৈত্র মাস। পথে নানা দুঃখের কথা আষাঢ় মাসে পূবের হাওয়া পশ্চিম হইতে বহিতে লাগিল। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসের জল-ঝড় মাথার উপর দিয়া গেল। দুর্গোৎসবের সময় বাড়ীতে কত ধুমধাম, বাস্থ্যভাণ্ড, দরিদ্রভোজন ও দীন দুঃখীকে নব বস্ত্ৰ দান,