পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOV RV পুরনারী সামাজিকগণ একত্র হইয়া বিচারে বসিলেন, কিন্তু গৰ্গ ছিলেন মহাপণ্ডিত, র্তাহার হৃদয় ছিল। উদার ও মহানুভব, র্তাহার সঙ্গে কোন পণ্ডিতই বিচারে আঁাটিয়া উঠিতে পারিলেন না। গোঁড়া দলের নেতা নন্দ পণ্ডিত ও র্তাহার দল বিচারের দিক দিয়া গেলেন না,-আির্তাহারা বলিলেন, “এই কঙ্ক চণ্ডাল-গৃহে চণ্ডালের অন্নে পালিত, ইহাকে আমরা কিছুতেই সমাজে লাইতে প্ৰস্তুত নাহি ।” কোন যুক্তি-তর্ক নাই, শুধুই ঘাড় নাড়িয়া তাহারা অসম্মতি জানাইলেন। শেষে এই বলিয়া চলিয়া গেলেন, “গৰ্গ পণ্ডিত ইচ্ছা করিলে কঙ্ককে লইয়া থাকিতে পারেন, কিন্তু তাহা হইলে তিনি আর আমাদের পাংক্তেয় হইবেন না । যে ব্যক্তি জন্মের পরেই চণ্ডালের অন্ন খাইয়াছে—তাহাকে সমাজে গ্ৰহণ করার প্রস্তাব যে করে, সেও ব্ৰাহ্মণ নহে। অনাচারে জাতি, কুল নষ্ট হইয়া যায়, মাটীতে ফুল পড়িয়া গেলে তাহা দিয়া দেবতা পূজা হয় না।” সেই ক্ষুদ্র পল্পীতে হাটে, মাটে, ঘাটে, আর কোন কথা নাই, কঙ্ক নাকি সমাজে উঠিবো! সকলের মুখে এই একই কথা। কোন কোন উদার চরিত্র লোক গর্গের কাৰ্য্য শাস্ত্রসঙ্গত মনে করিলেন, অন্য সকলে বিদ্রুপ ও কটুক্তি করিতে লাগিলেন ; কেহ কেহ গর্গের সম্মুখে উদারতার ভান করিয়া র্তাহার মনস্তুষ্টি সাধনে তৎপর হইলেন, কিন্তু আড়ালে যাইয়া ষড়যন্ত্রে যোগ দিলেন। সমাজের বহু লোক গর্গের মতের বিরোধী হইলেন। “কত তর্ক যুক্তি গৰ্গ সকলে দেখায়। তবু না সে বিধি দিল পণ্ডিত সভায় । কেহ বলে তুলি ঘরে, কেহ বলে নয়। এই মতে নানা স্থানে বহু তর্ক হয় ।” ষড়যন্ত্রকারীরা ক্রমশঃ ঘোট পাকাইতে লাগিল। তাহারা প্রচার করিল, কঙ্ক শুধু চণ্ডালের গৃহে পালিত নহে; সে দস্তুর মত কলমী পড়িয়া মুসলমান পীরের নিকট দীক্ষিত হইয়াছে। সে মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়াছে। জোর হাওয়ায় আগুনের শিখা যেরূপ অল্প সময়ের