পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y8 বাংলার পুরনারী তাহার পদ-শব্দে চমকিত হইয়া রাণী দ্রুত পদে আসিয়া দ্বার মোচন করিলেন “হায় হায় করিয়া রাজা ধরে সাপুটিয়া রাজার কান্দনে গলে পাষাণের হিয়া ।” রাণী বলিলেন, “আমার প্রাণপতি-আমাকে ছাডিয়া দাও-আজ আমার শাপ মোচন হইবে, আমি দেবপুরে যাইব । “এই কথা বলিয়া রাণী শূন্যে গেল উড়ি। হস্তেতে ছিড়িয়া রইল অগ্নিপাটের শাড়ী ৷” এই গীতিকার ঐতিহাসিকতা। দীঘির জলে রাণী আত্মোৎসর্গ করিয়াছিলেন, “শুঙ্কোদ্বার’ হইয়াছিল, যে কারণেই হউক দীঘি। জলে থৈ থৈ করিয়া পূর্ণ হইয়া উঠিয়াছিল। এই পৰ্য্যন্ত ঐতিহাসিক সত্য। তারপর রাণীর শোক সহ্যু করিতে না পারিয়া রাজা জানকী নাথ মল্লিক অকালে প্ৰাণ ত্যাগ করিয়াছিলেন, ইহাও ঐতিহাসিক সত্য । স্বামীর পূর্ব পুরুষদের উদ্ধারের জন্য শুদ্ধা অপাপবিদ্ধ, পতিব্ৰতা রাণী -সরল বিশ্বাসের হোমাগ্নিতে আত্মদান করিয়াছিলেন । শিক্ষিত লোকেরা এই কুসংস্কারের যতই দোষ বাহির করুন না কেন, এবং এই কাৰ্য্যের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক টিটুকারি দেন না কেন-জন-সাধারণ এই বিশ্বাসপরায়ণার স্বর্ণ ছবি,- নানারূপ অলৌকিক সৌন্দৰ্য্য ও ঘটনার পরিকল্পনা করিয়া সাজাইয়াছে। বৈজ্ঞানিক খুটি নাটি প্রশ্ন না তুলিয়া আমি এই সাধারণের পরিকল্পিত দেবীমূৰ্ত্তি খানির পাদপদ্মে শ্ৰদ্ধা ও ভক্তির পুষ্পাঞ্জলী দিতেছি। এইরূপ আত্মদান আমাদের দেশে প্ৰাচীনকালে দুৰ্লভ ছিল