পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8२३ বাংলা শব্বতত্ত্ব গোস্বামী, প্রমথ চৌধুরী, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, বীরেশ্বর পাড়ে, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী, রাজেন্দ্র বিদ্যাভূষণ, সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ, প্রমথনাথ তর্কভূষণ প্রমুখ সভ্যগণ সেদিনের আলোচনায় ও বিতর্কে যোগদান করেন । আলোচনার শেষে রবীন্দ্রনাথ যাহা বলেন নিম্নে উদ্যুত श्ल : এত কথার পর আমার একটা কৈফিয়ত দেওয়া আবখ্যক হইতেছে । আমি বলিয়াছি বাংলাব্যাকরণ বাংলানিয়মে চলিবে, সংস্কৃতনিয়মে চলিবে না, এ-কথার প্রতিবাদ কেন হয় বুঝি না। পণ্ডিতমহাশয়েরা মুখে যাহা বলিয়াই প্রতিবাদ করুন-না কেন, মনে মনে আমার কথাটা স্বীকার না করিয়া পারিবেন না। তদ্বিত ও কুৎ প্রত্যয়াস্ত কতকগুলি খাটি বাংলাশব্দ সংগ্ৰহ করিয়া আমি ইতিপূর্বে পরিষদের সম্মুখে উপস্থিত করিয়াছিলাম। আমিই ব্যাকরণ লিখিতেছি বা লিখিব এরূপ দুরভিসন্ধি আমার ? অামি কতকগুলো শব্দ সংগ্ৰহ করিয়া দিয়াছি, ভবিষ্যং বৈয়াকরণের কার্ধের জন্য উপকরণ সংগ্ৰহ করিয়া দিয়াছি বলিয়াই কি আমার এতটা অপরাধ হইয়াছে। যাহারা এইসকল শব্দকে slang বলিয়া ঘৃণা করেন আর ভাষার মধ্যে আমিই এইসকল slang জামদানি করিতেছি বলিয়া আমার উপর খড়গহস্ত হইয়া উঠিতেছেন, তাহাদের একটা কথা বলিবার অাছে, আমি আমদানি করিতেছি এটা কী রকম কথা । পিতৃপিতামহাদি হইতে এইসকল শব্দ কি আমরা পাই নাই । আজ সবগুলাকে কুড়াইয়া একত্র করিবার চেষ্টা করিভেছি, ব্যবহার করিবেন আপনার । তাহাদের মধ্যে যদি সংগ্রহের দোষে দু-একটা বিজাতীয় শব্দ জাসিয়া পড়িয়া থাকে, তাহাতে আপনাদের ক্ষতি কী। ব্যবহারের সময়ে বিচার করিয়া লইবেন । সংগ্রহকারকের হস্তে বিচারভার দিতে নাই, তাহা হইলে অনেক আসল জিনিস বাদ পড়িয়া যাইতে পারে। প্রত্যয়গুলির অামি যে-রূপ উল্লেখ করিয়া গিয়াছি সেইগুলিই প্রত্যয়ের প্রকৃত রূপ বলিয়া আমি আপনাদের গ্রাহ করিতে বলি না। আমার নিজেরও সে-বিষয়ে সন্দেহ যে নাই এমন নহে। আরও একটা কথা, আমি যতগুলা প্রত্যয়ের উদাহরণ দিয়াছি তাহা দেখিয়া আপনাদেরও কি ধারণা হয় না যে, বাংলাপ্রত্যয় বলিয়া কতকগুলা পদার্থ বাস্তবিকই আছে,— তা সেগুলার রূপ আমি যেরূপ নির্ণয় করিয়াছি তাহাই হউক আর আপনার বিচার করিয়া ৰাহ স্থির করিতে পারেন তাহাই হউক। অনেকের মনের গৃঢ় ভাব এই ৰে, অধিকাংশ