পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বাংলা বহুবচন
৩৯

বাংলার তুলনা হয় না, কারণ, মৈথিলীতে বাংলার ন্যায় কতৃকারক বহুবচনের কোনো বিশেষ বিভক্তি নাই।

  কিন্তু দেখা যাইতেছে সর্বনাম উত্তম ও মধ্যম পুরুষে মৈথিলী কর্তৃকারক বহুবচনে হম্‌রাসভ তোহরাসভ ব্যবহার হয়, এবং অন্যান্য কারকেও হম্‌রাসভকে তোহরাসভকে প্রভৃতি প্রচলিত।

  মৈথিলী সর্বনামশব্দে যে ব্যবহার, বাংলায় সর্বনাম ও বিশেয়ে সর্বত্রই সেই ব্যবহার।

  ইহা হইতে দুই প্রকার অনুমান সংগত হয়। হয়, এই হমরা এককালে বাংলা ও মৈথিলী উভয় ভাষায় বহুবচনরূপ ছিল, নয় এককালে যাহা কেবল সম্বন্ধের বিভক্তি ছিল বাংলায় তাহা ঈষৎ রূপান্তরিত হইয়া কর্তৃকারক বহুবচন ও মৈথিলী ভাষায় তাহা কেবল সর্বনাম শব্দের যষ্ঠী বিভক্তিতে দাঁঁড়াইয়াছে।

  বলা বাহুল্য আমাদের এই আলোচনাগুলি সংশয়পরিশূন্য নহে। পাঠকগণ ইহাকে অনুসন্ধানের সোপানস্বরূপে গণ্য করিলে আমরা চরিতার্থ হইব।

  দীনেশবাবুর বঙ্গভাষা ও সাহিত্য, হ্যর্নলে সাহেবের গৌড়ীয় ভাষার ব্যাকরণ, কেলগ সাহেবের হিন্দিব্যাকরণ, গ্রিয়র্সন সাহেবের মৈথিলী ব্যাকরণ, এবং ডাক্তার ব্রাউনের আসামি ব্যাকরণ অবলম্বনে এই প্রবন্ধ লিখিত হইল।

  জ্যৈষ্ঠ ১৩০৫