পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So শব্দতত্ত্ব য ফলা, ঋ ফলা, ক্ষ পরে থাকিলেও অভাবার্থসূচক “অ’য়ের বিকার হয় না । যথা—অকিঞ্চন, অকুতোভয়, অখ্যাতি, অমৃত, অক্ষয়, নিম্নলিখিত শব্দগুলি নিয়ম মানে না অর্থাৎ ই উ যফলা ঋফল ইত্যাদি পরে না থাকা সত্ত্বেও ইহাদের আদ্যক্ষরবর্তী অ ও হইয়া যায়। মন্দ, মন্ত্র, মন্ত্রণ, নখ, মঙ্গল, ব্ৰহ্ম । আমি এই প্রবন্ধে কেবল আদ্যক্ষরবর্তী অকার উচ্চারণের নিয়ম লিখিলাম। মধ্যাক্ষর বা শেষাক্ষরের নিয়ম অবধারণের অবসর পাই নাই । মধ্যাক্ষরে যে প্রথম অক্ষরের নিয়ম খাটে না, তাহা একটা উদাহৰণ দিলেই বুঝা যাইবে । “বল” শব্দে “ব”য়ের সহিত সংযুক্ত অকারের কোনো পরিবর্তন হয় না, কিন্তু "কেবল” শব্দের “ব”য়ে হ্রস্ব ওকার লাগে । ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের নিয়মও সময়াভাবে বাহির করিতে পারি নাই । সাধারণের মনোযোগ আকর্ষণ করিয়৷ দেওয়াই আমার এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য । যদি কোনো অধ্যবসায়ী পাঠক রীতিমতো অন্বেষণ করিয়া এই সকল নিয়ম নিৰ্দ্ধারণ করিতে পারেন তবে আমাদের বাংলা ব্যাকরণের একটি অভাব দূর হইয়া যায়। এখানে ইহাও বলা আবশ্যক, যে, প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণ একখানিও প্রকাশিত হয় নাই। সংস্কৃত ব্যাকরণের একটু ইতস্তত করিয়া তাহাকে বাংলা ব্যাকরণ নাম দেওয়া হয় । বাংলা ব্যাকরণের অভাব আছে, ইহা পূরণ করিবার জন্য ভাষাতত্ত্বানুরাগী লোকের যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত । > asb |