পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদ্ধার হইয়াছে তাৰ পাঠে জানা যায় ঐ সময় গঙ্গেরিডই সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিল ১ ইংর সহিত কলিঙ্গ রাজ্যের উল্লেখ ছিল এবং ইহার পূৰ্ব্বসীমা ছিল গঙ্গানদী। ইছা হইতে নিশ্চিতরূপে অছুমান করা যায় যে রাঢ় ও কলিঙ্গ মৌর্য্য সাম্রাজ্যের অধীন ছিল না ; মৌর্ষ্য সম্রাটগণ পরে কলিঙ্গকে অধিকারভুক্ত করেন। অশোকের অনুশাসনে কোথাও বঙ্গের উল্লেখ নাই ; কিন্তু তাহার ২য় ও ১৩শ প্রধান অনুশাসনে মৌৰ্য্য সাম্রাজ্যের যে সীমা নির্দেশ করা হইয়াছে, তাহা হইতে বুঝিতে পারা যায় যে রাঢ় ও বঙ্গ তখন মৌৰ্য সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল না। খ্ৰীষ্টীয় ৪র্থ শতাব্দীর মধ্যভাগে কুষাণ সাম্রাজ্য বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডরাজ্যে বিভক্ত হইয়া যায়। এই সময়ে বঙ্গের রাজনৈতিক অবস্থা কিরূপ ছিল জানা शृद्धं मां । - 雌 বাঙলা দেশে বাকুড়া জেলায় শুশুনিয়া পৰ্ব্বতপাত্রে ষে শিলালিপি আছে তাহা হইতে জানা যায়, সিংহবৰ্ম্মার পুত্র চক্রস্বামী বা বিষ্ণুর উপাসক পুষ্করণ নগরের অধিপতি চন্দ্রবন্ধ বিষ্ণুর এক মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। অনেকে মনে করেন যে শুশুনিয়া পৰ্ব্বতলিপির চন্দ্রবন্ধাকেই সমুদ্রগুপ্ত দিগ্বিজয়ের অব্যবহিত পূৰ্ব্বে পরাজিত করেন। এলাহাবাদ দুর্গমধ্যে অবস্থিত অশোকের শিলালিপিতে সমুদ্রগুপ্তের যে প্রশস্তি উৎকীর্ণ আছে, তাহাতে বলা হইয়াছে যে সমুদ্রগুপ্ত চন্দ্রবক্ষ্মা নামক আধ্যাবর্তের এক রাজাকে বিনষ্ট করিয়াছিলেন । খ্ৰীষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে সমুদ্রগুপ্ত সমগ্র আর্য্যাবৰ্ত্ত অধিকার করেন ; সমতট (দক্ষিণ বা পূৰ্ব্ব বঙ্গ ), ডবাক (সম্ভবতঃ ঢাকা ), কামরূপ, প্রভৃতি র্তাহাকে কর দিত । গুপ্তরাজগণের শাসনাধিকারে গৌড় বঙ্গের নানারূপ ভাগ্যবিপৰ্য্যয় ঘটিয়াছিল। গুপ্তগণের পতনে বঙ্গদেশের রাজগণ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন ; ইহাদের মধ্যে কর্ণসুবর্ণের রাজগণ ছিলেন প্রধান । খ্ৰীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে উত্তরাপথের পূর্বাঞ্চলে অনেক নূতন শক্তি জাগিয়ী উঠিয়াছিল এবং গৌড়বাসী আটশত বৎসর পরে পুনরায় উত্তরাপথে একাধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। তখন শশাঙ্ক নামে এক রাজা পূৰ্ব্বাঞ্চলের অন্যতম অধিপতি ছিলেন । এই শশাঙ্কের উল্লেখ ধাণভট্টের হর্ষচরিতে, চৈনিক পরিব্রাজক ইউয়ান চোয়াঙের ভ্রমণ-বৃত্তাস্তে এবং দুইখানি খোদিত লিপিতে পাওয়া যায়। এই সকল হইতে জানা যায় যে শশাঙ্ক কর্ণসুবর্ণের অধিপতি ছিলেন ; তাহার অপর নাম ছিল নরেন্দ্রগুপ্ত । ইনি গৌড় ও রাঢ় দেশ অধিকার করিয়া মগধ পৰ্য্যস্ত রাজ্য বিস্তার করিয়াছিলেন এবং হর্ষবৰ্দ্ধনের জ্যেষ্ঠ ভ্রাত রাজ্যবৰ্দ্ধনকে নিহত করেন । কর্ণসুবর্ণ মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত রাঙামাটি নামক স্থানে অবস্থিত ছিল বলিয়া কথিত হয় । , {