পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রসিদ্ধ হওয়ায় তাহার পর যে কেহ রামায়ণের কোনও অংশ সুললিত, সরসভাবে রচনা করিলে তাহা কৃত্তিবাসের কীর্তি বলিয়া বিবেচনা করা হইত। এইভাবে কবিচন্দ্রের কাব্যের শ্রেষ্ঠ অংশগুলিও কৃত্তিবাসের রচনা বলিয়া আমাদের নিকট পরিচিত । দৃষ্টান্তস্বরূপ আমরা ‘অঙ্গদ রায়বারের কথা উল্লেখ করিতে পারি। বটতলার পুস্তকালয় হইতে কৃত্তিবাসী রামায়ণের যে সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছে, তাহাই আমাদের দেশে প্রচলিত। কিন্তু এই বটতলা-সম্পাদক যাহার রচনায় যেটুকু ভাল পাইয়াছিলেন, তাহাই কৃত্তিবাসের বলিয়া চালাইয়া দিয়াছেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ হতে যে রামায়ণ মুদ্রিত হইয়াছিল তাঁহাতে এই ‘অঙ্গদ রায়বার’ অতি সংক্ষেপে বর্ণিত। কিন্তু বটতলার কৃপায় কবিচন্দ্র রচিত অঙ্গদ রায়বারটি আমরা কৃত্তিবাসের রচনা বলিয়াই জানিয়াছি । কৃত্তিবাসী রামায়ণ হইতে এই ংশটুকু পড়িলেই কবিচন্ত্রের কবিত্বশক্তির পরিচয় পাওয়া যাইবে। আমরা সামান্ত অংশ উদ্ধৃত করিতেছি – কোন বাপ তোর চেউীর অন্ন খাইল পাতালে। কোন বাপ তোর বাধা ছিল অৰ্জ্জুনের অশ্বশালে। কোন বাপ তোর ধনুক ভাঙ্গতে গেছিল মিথিলা । কোন বাপ তোর কৈলাস পৰ্ব্বত তুলিতে গিছিল৷ ৷ কোন বাপ ত্যের জব হল জমদগ্ন্যের তে5ে 1 মোর বাপ তার কোন বাপকে বেঁ ধছিল লেজে । একে একে কহিলাম তেfর সকল বাপের কথা । ইহা সবারে কাজ না তোর যোগী বাপটি কোথা ॥ প্রায় তিন শত বৎসর পূৰ্ব্বে পূৰ্ব্ববঙ্গের 'দীনার দ্বীপ ( সম্ভবতঃ বৰ্ত্তমান ঢাক) জেলার মহেশর্দি পরগণার অন্তর্গত ঝিনারদি ) নিবাসী পিতা ও পুত্র ষষ্ঠীবর ও গঙ্গাদাস সেন রামায়ণ ও মহাভারতের অনুবাদ করেন । ষষ্ঠীবর গুণরাজ উপাধিযুক্ত ভণিতাও ব্যবহার করিয়াছেন। ষষ্ঠবর একজন বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন এবং স্থলেখক বলিয়া আদৃত হইতেন । সরল, সংক্ষিপ্ত এবং পরিপক্ক রচনার জন্য ইহার গ্রন্থগুলি চিত্তাকর্ষক হইয়। उँठेग्नांछिल । বঁকুড়া জেলার ভুলুই গ্রাম নিবাসী জগৎরাম রায় ১৭১০ খ্ৰীষ্টাব্দে রামায়ণ গ্রন্থ রচনা করিয়াছিলেন । কথিত হয় যে এই গ্রন্থের শেষ অংশটি কবির পুত্র রামপ্রসাদের রচনা। পুরাণ, রামায়ণ এবং রামচন্দ্র সম্বন্ধে যত কাহিনী প্রচলিত ছিল, জগৎরাম তাহার গ্রন্থে সে সমস্তই লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। তাই তাহার 40ు.