পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ইনিও কবিচন্দ্র উপাধি ব্যবহার করিতেন এবং শিবমঙ্গলে মল্লরাজ বীরসিং দেবের কথা উল্লেখ আছে। অনেকে ইহা স্বীকার না করিয়া লইলেও এরূপ অনুমানের যথেষ্ট সঙ্গত কারণ আছে। দ্বিজ হরিহরের পুত্র দ্বিজ মণিরাম বা দ্বিজ সুন্দর বৈদ্যনাথ মঙ্গল’ নামে একখানি কাব্য রচনা করেন । ইহার রচনা কাল কাব্যে উল্লিখিত হয় নাই, পুথির লিপি কাল ১২১৯ সাল। yদীনেশচন্দ্র সেন মহাশয় তাহার বঙ্গভাষা ও সাহিত্যে দ্বিজ ভগীরথের শিবগুণ মাহাত্ম্য নামক কাব্যের উল্লেখ করিয়াছেন । - বাংলা শিবায়ণ-গ্রন্থ সমূহে শিবের মূল কাহিনীটি এইরূপ :– দেবসভায় মহাদেব শ্বশুর দক্ষকে সম্মান করেন নাই। ইহাতে অপমানিত হইয়া দক্ষ শিবহীন ঘজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। শিবকে নিমন্ত্রণ করা হয় নাই ; কিন্তু সতী পিতৃগৃহে যজ্ঞের কথা শুনিয়া বিনা নিমন্ত্রণে শিবের নিযেপ অমান্ত করিয়া সেখানে গেলেন এবং পিতার মুখে পতিনিন্দ শুনিয়া দেহত্যাগ করিলেন। শিব রুদ্রমূর্তি ধারণ করিয়া দক্ষের যজ্ঞ পণ্ড করিলেন। দক্ষ ছাগমুগু ধারণ করিয়া কোনও রকমে বাচিয়া গেলেন, কিন্তু তাতার রাজপ্রাসাদ শ্মশানে পরিণত হইল । সতী হিমালয় কন্স গৌরীরূপে জন্মগ্রহণ করিলেন এবং কঠোর তপস্তার ফলস্বরূপ মহাদেবকে পতিরূপে লাভ করিলেন । শিব ছিলেন নিঃস্ব । ভিক্ষারে কোনরূপে সংসার চালাইতেন। এই দারিদ্র্য গৌরীর বুকে বড়ই বাজিতে লাগিল । গৌরীর প্রশ্নের উত্তরে একদা শিব তাহাকে জানাইলেন যে ফাঙ্কনের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে যদি কেহ উপবাস করিয়া বিল্বপত্র-সহযোগে তাছার পূজা করে তবে সে মোক্ষ লাভ করিবে, কারণ শিব ইহাতে পরম তৃপ্তিলাভ করেন । দারিদ্র্যের যন্ত্রণ সহ করিতে না পারিয়া গৌরী মহাদেবকে চাষ করিতে পরামর্শ দিলেন, কারণ দেবাদিদেব হইয়া চাকুরী করা ভাল দেখায় না। শিব অনিশ্চিত ফলের জন্য পরিশ্রম করিতে নারাজ হইলেন ; কিন্তু অর্থাভাবে অন্য কিছু করা সম্ভব নয় বলিয়া মতে গিয়া চাষ করিতে স্বীকৃত হইলেন । ইন্দ্রের নিকট হইতে জমির বন্দোবস্ত লইয়া বিশ্বকর্মর নিকট হইতে লাঙল লইয়া এবং কুবেরের নিকট হইতে বীজ ধার করিয়া চাষ আরম্ভ করিলেন । পৃথিবী শস্ত সম্ভারে ভরিয়া উঠিল, শিবের দারিদ্র্য ঘুচিল। শিব চাষ লইয়া মর্তেই রহিয়া গেলেন, কৈলাসে ধাইবার নাম করিলেন না। এদিকে পার্বতি ব্যস্ত হইলেন ; নারদের পরামর্শে তাহাকে আনিবার বহু চেষ্টা 铬