পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রকাশ করিল : হয় ইহার কঠিন পরীক্ষা কিংবা ধনপতি লক্ষ টাকা জরিমান না । দিলে কেহই তাহার গৃহে আহার করিবে না বলিল । ধনপতি টাকা দিতে স্বীকৃত হইল, কিন্তু লহনার প্ররোচনায় তৎপরিবর্তে খুল্লনার সতীত্ব পরীক্ষার আয়োজন হইল। খুল্লনা জলে ডুবিল না, আগুনে পুড়িল ন। তখন সকাল নীরব হইল । ইহার কিছুদিন পরে রাজার আদেশে ধনপতিকে অশুভ দিনেই সিংহলযাত্রা করিতে হইল। শিব-ভক্ত ধনপতিকে লহন জানাইল যে খুল্লন চণ্ডীর পূজা করিতেছে ; যাত্রার পূর্বে ধনপতি দেবীর ঘটে পদাঘাত করিল। সমুদ্রবক্ষে দেবী ইহার প্রতিশোধ লইলেন ; ধনপতির ছয় ডিঙা ডুবিল। সে কোনও রকমে একটি ডিঙায় সিংহলে চলিল। পথে দেবীর মায়ায় ধনপতি দেখিল যে সমুদ্রবক্ষে এক পদ্মফুলের উপরে এক কামিনী বসিয়া একটি গজ কেবলই গ্রাস করিতেছে ও পুনরায় তাহা বমন করিতেছে । সিংহলে পৌছাইয়া রাজাকে কমলেকামিনী দর্শনের কাহিনী বলতে তিনি অবিশ্বাস করিলেন । ধনপতি অঙ্গীকার করিল যে সে দেখাইতে না পারিলে যাবজ্জীবন কারারুদ্ধ থাকিবে এবং পারিলে অর্ধেক রাজত্ব পাইবে । চণ্ডীর ছলনায় । বিফল হইয়া ধনপতি কারাগারে অবরুদ্ধ হইল । এদিকে মালাধন নামক গন্ধৰ্ব শিব কতৃক অভিশপ্ত হইয়। খুল্লনার পুত্র শ্ৰীমন্তরূপে জন্মগ্রহণ করিল। ক্রমে বড় হইয়া পাঠশালায় পডিতে গেলে একদিন গুরুমহাশয় তাহার জন্ম সম্বন্ধে কটুক্তি করিলেন। শ্ৰীমন্ত সকলের নিষেধ উপেক্ষা করিয়া পিতার সন্ধানে সিংহলযাত্রা করিল। সাগরবক্ষে সে-ও কমলেকামিনী দেখিল এবং সিংহলে পৌছাইয়া রাজ্যকে বলিল। অবিশ্বাসের সহিত রাজা বলিলেন যে সে যদি তাঁহাকে ইহা দেখাইতে পারে, তবে তিনি তাহাকে অপেক রাজত্ব ও কস্তার সহিত বিবাহ দিবেন ; আর না পারিলে শ্মশানে তাহার মাথ৷ কাটিয়া ফেলিবেন । চণ্ডীদেবী শ্ৰীমন্তকেও ছলনা করিলেন । ফলে রাজার লোকেরা তাহাকে মুশানে ধরিয়া লইয়া গেল। এখানে শ্ৰীমন্ত চণ্ডীর স্তব করিলে দেবী সেখানে উপস্থিত হইলেন ; তাছার অনুচর ভূত-প্রেতদিগের প্রহারে রাজার সৈম্বের পলাইল। চণ্ডীর কৃপায় সিংহলরাজ কমলেকামিনী দেখিলেন এবং ফলে ধনপতির সহিত ক্রমন্তের মিলন হইল। ধনপতি চণ্ডীর কৃপায় তাহার নষ্ট সম্পদ ফিরিয়া পাইয়া গৃহাভিমুখে যাত্রা °》