পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

عصبی wৰলম্বনে একখানি কাব্য রচনা করেন । চট্টগ্রামের অন্তর্গত দিয়াঙ্গের অধিবাসী গোবিন্দদাসের একটি বৃহৎ কালিকামঙ্গল কাব্য পাওয়া গিয়াছে। কবির প্রাচীনত্ব সন্দেহের বিষয়। কাব্যের বিষয়বস্তু, রচনারীতি, অথবা ভাষা ইহার প্রাচীনত্ব প্রতিপন্নের অনুকূল নহে। তবে কৰি ভক্তিভাবাপন্ন বলিয়া কাব্যে দেবীর মাহাত্ম্য বিশেষভাবে বর্ণিত হইয়াছে। নারায়ণদেব রচিত কালিকাপুরাণের যে খণ্ডিত পুথি পাওয়া গিয়াছে, তাহ হইতে কবি অথবা কাব্যের বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায় না । বলরাম কবিশেখরের যে কালিকামঙ্গল কাব্য পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে রচনাকাল দেওয়া নাই : মোটামুটি বলা যায় যে তিনি শ্রীচৈ6ন্তদেবের পরবর্তী এবং রামপ্রসাদের পূর্ববর্তী। কবিকে পূর্ববঙ্গবাসী বলিয়া অনুমান করা হইয়াছে, কিন্তু ভাষায় তাহার কোনও নিদর্শন নাই ; বরং পশ্চিমবঙ্গের তীর্থস্থানাদির সবিশেষ উল্লেখ দেখা যায়। এক হিসাবে বলরামই কালিকামঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি। ভক্তি পূর্ণ হৃদয় লইয়া তিনি দেবীর মাহাত্ম্য কীর্তনে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন বলিয়া তাহার কাব্যে অশ্লীলতার নাম গন্ধ নাই ; অথচ সহজ, সরল এবং সাবলীল কাব্য স্বষ্টি ইয়াছে। কবি ঘটনা বর্ণনায় যে সংযমের পরিচয় দিয়াছেন, তাহা অসাধারণ— পতি পুত্ৰ হীন৷ আমিত কুর্দীন নাহি মোর অন্যজন । তুমি পুত্ৰ সম ইথে নাহি কম চল মোর নিকেতন ৷ বলেন সুন্দর কোনখানে ঘর নামে হৈলে মোর মাসী । ভারতচন্দ্র রায় কবি গুণাকর ১৮৫২ খ্ৰীষ্টাব্দে যে অন্নদামঙ্গল কাব্য রচনা করেন তীঃfর একাংশে বিদ্যাসুন্দরের কাহিনী বর্ণিত হইয়াছে। ভারতচন্দ্রের কবিপ্রতিভা ছিল অসাধারণ ; ভাষা ও ছন্দের এরূপ অপূর্ব মিলন আর কোনও প্রাচীন কবি দেখাইতে পারিয়াছেন কিনা সন্দেহ। তাহার কতকগুলি পংক্তি প্রবাদ বাক্যের মত লোকের মুখে মুখে চলিয়াছে। আমরা কয়েকটি মাত্র নিম্নে উধুত করিলাম :– মস্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পতন । যতন করিলে লাভ মিলয়ে রতন । নীচ যদি উচ্চ ভাষে মুবুদ্ধি উড়ায়ে হাসে । ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞ যখন।