পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এবার হিন্দুধর্ম প্রচারিত হয়। কিন্তু দেশের নবপ্রচলিত বৌদ্ধ ধর্মমতকে অস্বীকার করার উপায় নাই, অথচ চিরাচরিত প্রাচীন ধর্মকেও সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। কাজেই সাধারণের মধ্যে বুদ্ধদেবের চরিত্রকেই আশ্রয় করিয়া শিবের চরিত্র श्रीट्टेन এবং তাঁহারই উপাসনা প্রচলিত হইল এবং যে তান্ত্রিক পূজা-পদ্ধতি উভয় ধর্মসম্প্রদায়ে প্রচলিত ছিল তাহ অবলম্বনেই পরস্পরের পূজা-পদ্ধতি প্রবর্তিত হইল। শিৰোপাসক এই শ্রেণীর যোগীদিগকে কন্‌ফট যোগীও বলা হইয়া থাকে। ইহাঙ্ক কারণ এই যে এই সম্প্রদায়ের লোকদের দুই কর্ণে দুইটি বৃহৎ ছিদ্র থাকে ( श्निौ কণ =কৰ্ণ ; ফট= ফাটা বা ছিদ্র ) ; ঐ ছিদ্র দুইটির মধ্যে একএকটি কুণ্ডল সন্নিবেশিত হয়, তাহা প্রস্তর, বেলোয়ার, বা গণ্ডারের শৃঙ্গে প্রস্তুত। ইহার দীক্ষার সময়ে উছা গ্রহণ করে এবং উহাকে শিবের মণ্ডল বলিয়া বিশ্বাস করে। উহাকে মুদ্র এবং দর্পণও বলে ; এইজন্য কনফট-যোগীদিগকে দর্শনী-যোগীও বলা হয়। ঐ কুণ্ডল ছাড়া ইহারা তিন-অঙ্গুলি প্রমণ একটি কৃষ্ণবর্ণ সামগ্রী একরূপ উৰ্ণ স্বত্রের মালায় বন্ধন করিয়া গলদেশে ধারণ করেন। ঐ বস্তুটিকে নাদ বলে এবং ষে স্বত্রমালায় উহা গ্রথিত থাকে তাহা সেলি বলিয়া উল্লিখিত হয়। ইহার শৈব ধর্মের সdaণ নিয়ম অনুসারে গেরুয়া বস্ত্র পরিধান; মস্তকে জটা ধারণ, শরীরে ভয়লেপন ও ললাটে বিভূতি দিয়া ত্রিপুণ্ড, করিয়া থাকে। বাহারা সর্বতোভাবে যোগসিদ্ধ হন, তাহাদিগকে সিদ্ধযোগী বা সিদ্ধ বলে ; এইরূপ চুরাশিজন সিদ্ধার নাম পাওয়া যায় বটে, কিন্তু যোগীরা বলেন যে ইহার ছাড়া আরও বহুব্যক্তি ঐরূপ যোগসিদ্ধ হইয়াছেন। সিদ্ধাগণ মহাযানমতাবলম্বী। বৌদ্ধগান ও দোহার রচয়িতারূপে আমরা কয়েকজন সিদ্ধার পরিচয় পাইয়াছি সিদ্ধাগণ প্রাচীন হইলেও তাঁহাদের মঙ্গল-কাহিনীগুলি মোটেই প্রাচীন নছে ; ১৮শ শতাব্দীর পূর্বে রচিত ইহাদের বিষয়ে প্রামাণ্য কোন পুথিই পাওয়া যায় নাই । মঙ্গলকাব্যের আকারে যে সকল সিদ্ধযোগিগণের কীৰ্তি-কাহিনী এই শাখায় বণিত হইয়াছে তাছাদের মধ্যে মীননাথ বা মৎস্তেন্দ্রনাথ ও গোরক্ষনাথের কাহিনী এবং জলন্ধরিপাদ বা হাড়িপা ও রাজা গোবিন্দ-চন্দ্রের কাহিনী সমধিক প্রসিদ্ধ। মীননাথের কাহিনীতে বিশ্বাসযোগ্য বাস্তব-ব্যাপার কিছুই নাই ; কিন্তু হাড়িপ ও গোবিনচন্দ্রের কাহিনীতে বাস্তব জগতের সহিত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলিয়া acৰিকগণের গবেষণার অন্ত নাই। এই গোবিন্দচন্দ্রকে রাজা রাজেজচোলের তিরুমলয়শিলালিপিতে ঘণিত গোবিন্ধচন্দ্রের সহিত অভিন্ন প্রতিপাদন করিয়া মৈশ্বনসিংহ জেলায় ধাড়িচন্দ্র-প্রবর্তিত বংশের অন্ততম নৃপতিরূপে প্রমাণিত করা ইয়াছে। বলা বাহুল্য ৰে ধৰ্মপ্রচারের উদ্দেতে প্রচলিত কাব্যের মধ্যে ঐতিহাসিক nir