পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোরক্ষনাথ নর্তকীর বেশে রাজসভায় প্রবেশ করিলেন এবং নৃত্যগীতের সময়ে মঙ্গলের সংকেতে গুরুকে পূর্বকথা স্মরণ করাইয়া আত্মপ্রতিষ্ঠ করিতে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। একদিকে বিলাস-বাসনের ভোগমুখ, অন্যদিকে শিষ্য-প্রদর্শিত কৃচ্ছ সাধনের সংকল্প : মীননাথ আন্দোলিত হইলেন। শেষে গোরক্ষনাথ মহাজ্ঞান শুনাইলে তাহার চৈতন্য হইল। কদলীর নারীগণ গোরক্ষকে মারিয়া ফেলিবার চেষ্টা করিলে তিনি তাহাদিগকে শাপ দিয়া বাজুড়ে পরিণত করিয়া উড়াইয়া দিলেন এবং গুরু ও গুরুপুত্র বিন্দুনাথকে লইয়া বিজয়নগরে ফিরিয়া গেলেন। হাড়িপা-গোপীচন্দ্রের কাহিনীতে পাই যে শিবের শাপে জালন্ধরিপাদ হাড়িপা বা হাড়িরূপে পাটিকা ভুবনে বা মেহরিকুল বাস করিতেছিল। রাজমাতা ময়নামতী সিদ্ধা ছিলেন ; তিনি একদিন হাড়িপার মহাত্ম্য দেখিয়া তাহাকে সিদ্ধাচার্য বলিয়৷ জানিতে পারেন এবং পুত্রকে তাহার নিকট দীক্ষিত করিতে ইচ্ছুক হন । গোবিন্দচন্দ্র তখন যুবক ; সে অনে, পান, প্রভৃতুি ছয়কুড়ি' রানী লইয়া আনন্দে মত্ত। সে কিছুতেই সন্ন্যাস গ্রহণে এবং বিশেষ করিয়া এক হাড়ির নিকট দীক্ষা গ্রহণে স্বীকৃত হইবে না । বহু তর্ক-বিতর্ক এবং প্রমাণ-প্রয়োগের পর রাজা স্বীকৃত হষ্টলেও রাণীদের মোহে পড়িয়া আত্মবিস্তৃত হইল। ময়নামতী যোগবলে তাহার প্রাণ হরণ করিয়া শ্মশানে আবার যোগবলে তাঁহাকে বচাইলেন এবং তাহাকে হাড়ির নিকট দীক্ষা লইতে স্বীকৃত করাইলেন। - হাড়িপা শিষ্যকে নগরে ভিক্ষা করিয়া আনিতে পাঠাইলেন ; কিন্তু নিজে মায়াবলে গ্রামবাসিগণকে ডিক্ষা দিতে নিষেধ করিয়া দিলেন। কোথাও ভিক্ষা না পাইয়া রাজা স্ত্রীর নিকটে গেলেন ; সেখানেও বিফল হইয়া মাতার নিকটে গেলেন। ময়নামতী তাছাকে তত্ত্বকথা জিজ্ঞাসা করিলে গুরুর কৃপায় তাহীদের সদুত্তর দিয়} রাজা কিছু ভিক্ষ পাইলেন, কিন্তু ফিরিবার পথে গুরুর মায়ায় তাহাও উড়িয়া গেল ; রাজা রিক্তহস্তে গুরুর নিকট ফিরিলেন। তখন গুরু-শিষ্যে ভিক্ষার জন্য দেশান্তরে গেলেন এবং দক্ষিণদেশের সমুদ্র তীরে হীরা নামক এক বীরাঙ্গনার নিকট চারকড়া কড়িতে শিস্যকে বাধী রাখিয়া গুরু প্রস্থান করিলেন। এখানে রাজা ভূত্যের কাজ করিতে লাগিল এবং হীরার প্রলোভনে মুগ্ধ হইল না ব লয় নানাবিধ হীন এবং পরিশ্রমের কাজ করিতে বাধ্য হইল। এইভাবে বার বৎসর কাটিলে অস্থান-পর্তুনা স্বামীবিরহে কাতর হষ্টয়া শুক সারীর অঙ্গেপত্র বাধিয়া দেশে দেশে পাঠাইল ; তাহারা বহুস্থান ঘুরিয়া অবশেষে রাজার সন্ধান পাইয় তাহার লিখন লইয়া ফিরিয়া গেল। বযুদ্ধয় ময়না তাঁকে ইহা জানাইলে তিনি মন্ত্রবলে গুরুকে জাগাইলেন এবং গুরু ও শিস্যকে আনিবার Նրա