পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৮ বাঙ্গলার ইতিহাস । - - | কুলী খাঁ নুতন নগর স্থাপন করিলেন ; সঙ্গে সঙ্গে বাদশাহের প্রতিনিধি বঙ্গদেশ ছাড়িয়া দূরে বিহারের মধ্যে চলিয়া গেলেন। এই সময়েই সীতারামের আশালতা পুপফলে সমৃদ্ধ হইবার অবসর পাইল । সীতারাম বাদশাহ-সরকারে রাজস্ব প্রদান বন্ধ করিলেন। মুরডল্লার পরে দিল্লী হইতে সৈয়দ আবুতোরাপ যশোহর প্রদেশের ফৌজদার হইয় আসিলেন। আবুতোরাপ আজিমুগ্ধানের প্রিয়পাত্র, বাদশাহ বংশের সহিত ঘনিষ্ট সম্বন্ধে সম্বদ্ধ। মুসলমান লেখকের মতে বিদ্যাবুদ্ধি ও কাৰ্য্যদক্ষতায় তৎকালে তাহার মত লোক অল্পই ছিল। তিনি মুর্শিদকুলীর অনুগ্রহ প্রার্থনা দূরে থাকুক, বরং তাহাকে অগ্রাহ করিয়াই চলিতেন। কিন্তু ফৌজদার মহোদর আভিজাত্য-গৌরবে বলবান হইলেই কাৰ্য্যসিদ্ধি হয় না ; তাহার সৈন্তসংখ্যা অল্প ছিল, তাহাতে রীতিমত বেতন দিবার শক্তির অভাবে তদ্বারা কাৰ্য্যপ্রাপ্তির বড় বেশী সম্ভাবনা ছিল না। সীতারাম এই সমস্ত লক্ষ্য করিয়া, নিরুদ্বেগে স্বীয় বলবৃদ্ধির ব্যবস্থা করিতে লাগিলেন। সময়ে মোগলাধিকার আক্রমণ করিয়া, পাশ্বস্থ জনপদসমূহে ভীতির সঞ্চার করিয়া দিয়াছিলেন। তারিখ বাঙ্গলার লেখকের ভাষার ‘জঙ্গল, খাল, বিল প্রভৃতির আশ্রয়ে থাকিয়া সীতারাম বাদশাহের কৰ্ম্মকর্তৃগণকে গ্রাহ করিতেন না, এবং নিজ জমাদারীর সীমার মধ্যে তাহাদিগকে প্রবেশ করিতে দিতেন না। তাহার অনেক তীরন্দাজ ও বর্ষাধারী রায়বংশী সিপাহী থাকায় ফৌজদার ও থানাদারের লোকজনের সহিত সৰ্ব্বদাই হাঙ্গামা বাধিত । তিনি উহাদিগকে দখল দিতেন না, অন্তান্ত পার্শ্ববৰ্ত্তী তালুকদারের সম্পত্তিও লুণ্ঠন করিতেন। দৈল্পসংখ্যা অত্যন্ন হওয়ায়, মীর আবুতোরাপ এই ছৰ্দান্ত জমিদারকে দমন করিতে অক্ষম হইলেন। পরিশেষে সাহায্যের জন্ত অগত্য নবাব মুর্শিদকুলীর নকট প্রার্থনা করিলেন ; কিন্তু নবাব এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উপেক্ষা প্রদর্শন করিয়াছলেন । নীরসাহেব সীতারামকে প্লুত করিবার জন্ত সৈন্ত পাঠাইলে, তিনি শৃগালবৃত্তি অবলম্বন করিয়া জঙ্গলভূমির আশ্রয় লইতেন , তীর তরবারযোগে যুদ্ধ করিয়া ফৌজদারী সৈন্তগণকে হয়রান করিতেন। প্রকাণ্ডস্থানে সম্মুখযুদ্ধ দিতেন না ; ফৌজদারী সৈন্যবল বেশী দেখিলে, গভীর বনভূমি ও নদী মধ্যে আশ্রয় লইতেন। সৈন্তগণ উহা অতিক্রন করিতে অসমর্থ হইয় ফিরিয়া আসিত। তিনিও পরক্ষণেই বাহির হইয়া লুণ্ঠনে ক্ষিপ্ৰহস্ততা প্রদর্শন