পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮৪
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

করে। হুপো এইরূপ করে। চড়ুই পাখীরাও ধূলিস্নানে অভ্যন্ত।

 ইহাদের উৎপতনভঙ্গীও অভিনব। সোজা সরল রেখা ধরিয়া ইহার উড়ে না। ঢেউয়ের মত উঠিয়া পড়িয়া অগ্রসর হয়। যদিও খুব বেগে ইহারা উড়ে না, তবু উড়িতে উড়িতে সহসা ডানদিকে বা বাম দিকে বোঁ করিয়া ঘুরিয়া যাইতে পারে—যেন কাহারও হুকুম শুনিয়া “রাইট হুইল” বা “লেফ্‌ট হুইল” করিতেছে।

 “হুপো” বা “হুদ্-হুদ্” এই উভয় আখ্যাই বোধহয় ইহার কণ্ঠধ্বনি হইতে আসিয়াছে। ইহা সর্ব্বদাই ‘উপ-উপ’ এইরূপ একটা শব্দ বাহির করে। এতদ্ব্যতীত ইহাদের কণ্ঠে অন্য কোন ধ্বনি নাই। ইহাদের বর্ণসুষমাই আছে, কণ্ঠসুষমা একেবারেই নাই। কিন্তু তাই বলিয়া ইহাদের কণ্ঠস্বর কর্কশ নহে।

 ইহারা কোটরে নীড় রচনা করে। যে কোনও একটি গর্ত্ত পাইলেই হয়, তাহা গাছেই হউক কিংবা বাড়ীর দেয়ালেই হউক। তবে দেয়ালের গর্ত্ত পাইলে—গাছ ইহারা পছন্দ করে না। রংপুরে আমার বাসার অন্দর মহলে, উঠানের অপরপারে রন্ধনশালার বহির্ভাগের দেয়ালে ছাদের অব্যবহিত নিম্নে একটি গর্ত্তে এক জোড়া হুপো আসিয়া প্রতি বছর শাবোকৎপাদন করিত। ইহারা খুব ক্ষুদ্র প্রবেশমুখসম্পন্ন গর্ত্ত পছন্দ করে, যাহাতে পক্ষী সমাজের গুণ্ডারা প্রবেশ করিয়া ডিম্ব বা শাবকের অনিষ্ট না করিতে পারে। নিদাঘকালেই ইহারা ডিম পাড়ে। ডিমগুলি ফেনশুভ্র হয় এবং সংখ্যায় ৪।৫টি করিয়া হইয়া থাকে। ডিম পাড়িবার পর স্ত্রী পাখীটি বাসায় প্রবেশ করিয়া ডিম্বোপরি উপবিষ্টা হয় এবং শাবক নির্গত না হইলে সে আর নীড় হইতে বাহির হয় না। এই সময়ে পুরুষপাখীটি অতি যত্ন সহকারে আহার সংগ্রহ করিয়া স্ত্রীকে খাওয়ায়। ইহারা সামাজিক নহে, জোড়ায় জোড়ায় বাস করে। তবে শাবকগুলি