পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩২
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

শীতের দেশে শীতকালটা কাটায়। অর্থাৎ ইহা আংশিক যাযাবর।

 যাযাবরত্ব পক্ষি-জীবনের একটা প্রকাণ্ড রহস্য এবং ভারতবর্ষের পাখীদের যাযাবর জীবনের ইতিহাস সম্বন্ধে যথেষ্ট গবেষণা হয় নাই। সুতরাং এ সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। যে সমস্ত পাখী একদেশে প্রজনন ঋতু কাটায় এবং অন্য ঋতুতে শতসহস্র মাইল দূরে গিয়া শীতের কয়েকটা মাস থাকে, তাহাদেরই যাযাবর বলে। কি ভাবে, কোন পথে, কোন দেশে পাখী যায়—ইহা অতীব কৌতুহলোদ্দীপক। আমাদের দেশে এই সব জানিবার কৌতুহল কয়জনের আছে?

 যাযাবর পাখীদের তিন শ্রেণীতে ভাগ করা চলে। (১) কতকগুলি পাখী ভারতবর্ষে গ্রীষ্মকালে শাবকোৎদন করিতে চায় না। তাহারা সুদূর সাইবেরিয়া বা নিকটবর্ত্তী দেশে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শাবকদের জনন ও পালন করিয়া লয় এবং শীত পড়িতে আরম্ভ করিলেই সেখান হইতে চলিয়া আসে। ইহারাই আসল যাযাবর অর্থাৎ ট্রু মাইগ্র্যাণ্ট। (২) আর একদল হিমালয়ের বায়ুই যথেষ্ট শীতল মনে করে এবং গ্রীষ্মকালে হিমালয়ের জঙ্গল প্রদেশে গিয়া শাবকোৎপাদন ক্রিয়া সম্পন্ন করে। ইহাদিগকে স্রেফ মাইগ্র্যাণ্ট বা যাযাবর বলা হয়। (৩) যে সব পাখী ভারতবর্ষ ছাড়িয়া চলিয়া যায় না, কাশ্মীর হইতে লঙ্কাদ্বীপের মধ্যবর্ত্তী ভূখণ্ডেই ঋতুবিশেষে বাস করে, তাহাদিগকে আংশিক যাযাবর বা পারসিয়েল মাইগ্র্যাণ্ট বলা হয়। বাংলায় “আভ্যন্তরিক যাযাবর” বলা হয়তো অসঙ্গত হইবে না। কোকিলকে এই শেষোক্ত শ্রেণীর যাযাবর বলা যায়। তবে এ সম্বন্ধে শেষ কথা বলা চলে কিনা আমার সন্দেহ আছে। বোম্বে ন্যাচুরেল হিষ্ট্রি সোসাইটি কোকিল ও পাপিয়াকে আভ্যন্তরিক যাযাবর শ্রেণীতে ফেলিয়াছেন। তবে বাংলা দেশের কোকিল আদৌ দেশ ছাড়িয়া যায় কিনা সন্দেহ। দক্ষিণবঙ্গে আমি