পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৬
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

ছাই রঙের; নিম্নবক্ষ কালো রেখাঙ্কিত শুভ্র। স্ত্রীপাখীটি অনুরূপ, তবে কণ্ঠ ও বক্ষের বর্ণ আর একটু গাঢ়।

 শাহী-বুলবুলের দেহের বর্ণ অনেকটা দোয়েলের মত—সাদা কালোর সুদৃশ্য সমাবেশ। ইহার দেহের উপরিভাগ, মায় মস্তকের দীর্ঘ ঝুঁটি, উজ্জ্বল কৃষ্ণবর্ণ এবং নিম্নভাগ শুভ্র। দোয়েলের মতই ইহার ডানার উপর একটা সাদা রেখা আছে এবং পুচ্ছাগ্রভাগও শুভ্র। তবে দোয়েল আঁটিসাট দেহ ও আয়তনে ছোট, শাহী-বুলবুল ছিপ্‌ছিপে গড়নে এবং লেজটি দীর্ঘ হওয়ায় দোয়েল অপেক্ষ লম্বায় দীর্ঘতর। কলিকাতার উপকণ্ঠে বর্ষাকালে ইহাকে দেখিতে পাওয়া যায়।

 কোকিল-গোষ্ঠির সব পাখিদের বিশেষত্ব এই, যে ইহারা উন্মুক্ত স্থানে বিচরণ করিতে পছন্দ করে না। আম, লিচু, বকুল, শিরীষ, নিম, অশ্বথ, বট প্রভৃতি ঘন পল্লব-বিশিষ্ট উচ্চ বৃক্ষের শাখামধ্যে আত্মগোপন করিয়া বেড়ানই ইহাদের অভ্যাস। এক গাছ হইতে অন্য গাছে যাইতে হইলে খুব দূর পাল্লার দৌড় ইহারা দেয় না। পরের ঘরে চুরী করা যাহাদের অভ্যাস তাহারা অপরাধীর মতই ফেরে। কাক, ছাতারে প্রভৃতি পাখী ইহাদের দেখিলেই ইহাদের পিছনে লাগে, সুতরাং আত্মগোপনশীলতা ইহাদের আত্মরক্ষার জন্যই প্রাকৃতিক ব্যবস্থা।

 অন্য পাখী বাসায় ইহাদের শৈশব কাটে বলিয়া সংস্কৃত সাহিত্যে ইহাদিগকে “পরভৃত” “অন্যপুষ্ট” প্রভৃতি আখ্যা দেওয়া হইয়াছে। কোকিল কাকের “পরভৃত”। পাপিয়া ও শাহী-বুলবুল ছাতারে পাখীর বাসায় নিজ সন্তান পালন করায়। বউ-কথা-কউ পাখীর সম্বন্ধে আমি নিজে কিছু জানিনা। ইহারা নাকি হিমালয়ের কয়েকটি ক্ষুদ্র পাখীকে প্রতারণা করিয়া এ কার্য্য করাইয়া লয়। কোকিল-গোষ্ঠিতে এমন পাখীও অবশ্য আছে যাহারা পরভৃত