পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



নীলকণ্ঠ

 দেবাসুরের সম্মিলিত চেষ্টায় সমুদ্রগর্ভ হইতে যে হলাহল উঠিয়াছিল তাহা সন্ন্যাসী ভোলানাথ কণ্ঠে ধারণ করিয়া নাম পাইয়াছিলেন নীলকণ্ঠ। কিন্তু আমাদের দেশে সহরে ও গ্রামে, কাননপ্রান্তে ও মাঠের মধ্যে, রেললাইনের ধারে টেলিগ্রাফের তারে যে খেচরটিকে দেখা যায়, তার নাম কেন নীলকণ্ঠ হইল? যখন সে চুপ করিয়া বসিয়া থাকে তখন তার দেহবর্ণে কোনও বিশিষ্টতা লক্ষিত হয় না। চোখের পাশ ও স্কন্ধদেশ নীলাভ হইলেও তাহা দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। বাকী দেহটি সামান্য গোলাপী আভাযুক্ত বাদামী রঙের। শরীরের গড়ন মোটাসোটা ঢ্যাপসা গোছের, দোয়েল, শালিক ফিঙ্গে প্রভৃতির মত সুঠাম নহে। কিন্তু যখন সে পক্ষ-বিস্তার করিয়া শূন্যপথে আপনাকে নিক্ষেপ করে, তখন তার পক্ষপতত্রের নিম্নভাগের ঘন নীল বর্ণচ্ছটা ডানার উত্থান পতনের সঙ্গে বিচিত্র দৃশ্যের সৃষ্টি করে—তাহার দেহের রূপ প্রজাপতির মত বর্ণচ্ছটাসমম্বিত হইয়া আমাদের অবাক করিয়া দেয়। মার্কিন দেশের লোক সেইজন্য ইহার নাম দিয়াছে—সারপ্রাইজ বার্ড। ইংরেজ ইহাকে “দি ব্লু জে” এবং “দি ইণ্ডিয়ান রোলার“বলে।

 বিলাতী সভ্যতার বিলাসের সামগ্রী যোগাইবার জন্য মানুষ অজ্ঞাতে নিজের অনেক ক্ষতি করে। ইউরোপীয় অঙ্গনাদের শিরোভূষণের জন্য সুন্দর পালকবিশিষ্ট কৃষির উপকারী এরূপ কত পাখীকে যে হত্যা করা হয় তাহার ইয়ত্তা নাই। এইরূপ পাখীদের মধ্যে নীলকণ্ঠ একটি। ইহার পক্ষের উজ্জ্বল নীল পালক শ্বেতাঙ্গিণীদের পোষাকের জন্য বহুল ব্যবহৃত হয়। এই পাখী কৃষির উপকারী বলিয়া আমাদের দেশে আইন অনুসারে ইহা অবধ্য। এমন কি, ইহাকে বন্দী