পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।

সমস্ত-সুপ্রশস্ত্যপেতসততবিরাজমানাশ্বপতিগজপতিনরপতিরাজত্রয়াধি-পতি বর্ম্মবংশকুলকমলপ্রকাশভাস্করসোমবংশপ্রদীপপ্রতিপন্নকর্ণগাঙ্গেয় শরণাগত বজ্রপঞ্জর-পরমেশ্বর-পরমভট্টারকপরমসৌর-মহারাজাধিরাজ অরিরাজ বৃষভশঙ্কর-গৌড়েশ্বর শ্যামলবর্ম্ম-দেবপাদবিজয়িনঃ

—বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, ব্রাহ্মণকাণ্ড, দ্বিতীয় ভাগ, পৃঃ ২২।

 পূর্ব্বোক্ত গ্রন্থের আর একস্থানে বসু মহাশয় বলিয়াছেন,—“তিনি (শ্যামলবর্ম্মা) সেনবংশীয় নৃপতির আশ্রয়ে করদরূপে রাজ্য শাসন করিতেন। কিন্তু সেই সেনবংশীয় অধীশ্বরের নাম পাশ্চাত্য কুলগ্রন্থে স্পষ্ট পাওয়া যায় না। এদিকে শ্যামলবর্ম্মা কোন কুলগ্রন্থে ‘শূরান্বয়’, আবার কোন কোন কুলগ্রন্থে ‘সেনান্বয়’ বলিয়াই বর্ণিত।”

—বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, ব্রাহ্মণকাণ্ড, দ্বিতীয় ভাগ, পৃঃ ১৯।

 পূর্ব্বোক্ত প্রমাণসমূহের উপর নির্ভর করিয়া, বেলাবো তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইবার পূর্ব্বে, শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু স্থির করিয়াছিলেন যে, শ্যামলবর্ম্মা সেনবংশীয় হেমন্তসেনের পৌত্র, বিজয়সেনের কনিষ্ঠ পুত্র ও বল্লালসেনের কনিষ্ঠ ভ্রাতা। ভোজবর্ম্মার বেলাবো তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইলে প্রমাণ হইল যে, বসুজ মহাশয়ের পূর্ব্বোক্ত সিদ্ধান্ত অসার এবং যে প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া তিনি এই সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছিলেন, সেই কুলশাস্ত্রের সিদ্ধান্তগুলি মিথ্যা কবিকল্পনা, তাহা প্রমাণস্বরূপ গণ্য হইতে পারে না। ভোজবর্ম্মার তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, শ্যামলবর্ম্মা সেনবংশীয় নহেন, তিনি যদুবংশজাত, তাঁহার পিতার নাম বিজয়সেন অথবা তাঁহার মাতার নাম বিলোলা নহে। দুঃখের বিষয় এই যে, বেলাবো তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইবার পরেও শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু “ভারতবর্ষ” পত্রিকায় “কুলগ্রন্থের ঐতিহাসিকতা ও ভোজের নবাবিষ্কৃত তাম্রশাসন” নামে একটি প্রবন্ধ লিখিয়া কুলশাস্ত্রের ঐতিহাসিক প্রমাণের মর্য্যাদা রক্ষা করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। এই প্রবন্ধে বসুজ মহাশয় বলিয়াছেন যে, পূর্ব্বে তিনি কুলশাস্ত্রের যে সমস্ত পুথি পাইয়াছিলেন, তাহা ভ্রমে পরিপূর্ণ, “সাত নকলে আসল খাস্তা হইয়াছিল।” সম্প্রতি তিনি টালানিবাসী ৺গুরুচরণ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাটী হইতে একখানি তালপত্রে লিখিত প্রাচীন পুথি পাইয়াছেন। ইহা ঈশ্বরকৃত বৈদিক-কুলপঞ্জিকা। “ভারতবর্ষ” পত্রিকায় বসুজ মহাশয় এই নূতন