পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।

আনন্দাশ্রুপূর্ণলোচনে বন্ধুগণকে পুনরায় দর্শন করিয়াছিল[১]।” ‘সমুদ্র পর্য্যন্ত জয়ের’ অর্থ বোধ হয় যে, তিনি দক্ষিণ রাঢ় এবং ‘ব’দ্বীপের শেষ সীমা পর্য্যন্ত স্বীয় অধিকার বিস্তার করিয়াছিলেন। ধর্ম্মপালদেবের খালিমপুরে আবিষ্কৃত তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, গোপালদেবের পত্নীর নাম “দেদ্দদেবী”[২]। স্বর্গীয় অধ্যাপক কিলহর্ণের মতানুসারে ‘দেদ্দদেবী’ ভদ্র নামক রাজার কন্যা; কিন্তু শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় বলিয়াছেন, “অধ্যাপক কিলহর্ণ ‘দেদ্দদেবীকে’ ভদ্র নামক এক রাজার কন্যা বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছিলেন, তিনি তাহার কোনরূপ প্রমাণের উল্লেখ করেন নাই। এক্ষণে কোন ঐতিহাসিক তথ্য প্রকটিত হইয়াছে বলিয়া বোধ হয় না, এখানে কেবল পৌরাণিক আখ্যায়িকাই সূচিত হইয়াছে[৩]।” গোপালদেবের বৃদ্ধ-প্রপৌত্র নারায়ণপালদেবের এবং তাঁহার বংশধরগণের তাম্রশাসনে গোপালদেবের নিম্নলিখিত পরিচয় পাওয়া যায়;—“যিনি কারুণ্যরত্নপ্রমুদিতহৃদয়ে মৈত্রীকে প্রিয়তমারূপে ধারণ করিয়াছিলেন, যিনি তত্ত্বজ্ঞান-তরঙ্গিণীর সুবিমল সলিলধারায়

  1. বিজিত্য যেনাজলধের্বসুন্ধরাং বিমোচিতামোঘ-পরিগ্রহা ইতি।
    সবাষ্পমুদ্বাষ্প-বিলোচনান্ পুনর্ব্বনেষু বন্ধূন্ দদৃ[শু]র্মতঙ্গজাঃ॥
    চলৎস্বনন্তেষু বলেষু যস্য বিশ্বম্ভরায়া নিচিতং রজোভিঃ।
    পাদপ্রচার-ক্ষমমন্তরীক্ষং বিহঙ্গমানাং সুচিরং বভূব॥
    —দেবপালদেবের মুঙ্গের তাম্রশাসন, ৩য় ও ৪র্থ শ্লোক; গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৩৫-৩৬, ৪১-৪২। 

  2. শীতাংশোরিব রোহিণী হুতভুজঃ স্বাহেব তেজোনিধেঃ
    সর্ব্বাণীব শিবস্য গুহ্যকপতে র্ভদ্রেব ভদ্রাত্মজা।
    পৌলোমীব পুরন্দরস্য দয়িতা শ্রীদেদ্দদেবীত্যভূৎ
    দেবী তস্য বিনোদভূর্মুররিপোর্লক্ষ্মীরিব ক্ষ্মাপতেঃ॥
    —ধর্ম্মপালের খালিমপুর তাম্রশাসন, ৫ম শ্লোক; গৌড়লেখমালা, পৃ: ১২।

  3. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ২০, পাদটীকা।