বংশধর রাজ্যপাল আত্মরক্ষার জন্য একবার ধঙ্গের পুত্র গণ্ডের ও তাহার পরে গজনীর দিগ্বিজয়ী বীর মহ্মুদের শরণাগত হইয়াছিলেন। দক্ষিণপথে প্রাচীন চালুক্য-বংশের পুনরুত্থান আরব্ধ হইয়াছিল; মহীপাল যখন গৌড়েশ্বর, তখনই দাক্ষিণাত্যে রাষ্ট্রকূট-রাজ্যের লোপ হইয়াছিল[১]। গৌড়ের পাল-রাজবংশের দুরবস্থার কথা পূর্ব্ব অধ্যায়েই বিবৃত হইয়াছে। এই সময়ে উত্তরাপথে কোকল্লের বংশধর গাঙ্গেয়দেব সহসা পরাক্রান্ত হইয়া উঠিলেন। গাঙ্গেয়দেবের পুত্র জগদ্বিজয়ী কর্ণদেব সপ্ততি বর্ষব্যাপী সুদীর্ঘ রাজ্যকালে সমগ্র ভারতবর্ষ জয় করিয়াছিলেন। তাঁহার শতবর্ষব্যাপী জীবন, পশ্চিমে হূণ-রাজ্য হইতে পূর্ব্বে বঙ্গরাজ্য পর্য্যন্ত এবং উত্তরে কান্যকুব্জ হইতে দক্ষিণে পাণ্ড্য ও কেরল দেশ পর্য্যন্ত সমস্ত আর্য্যাবর্ত্ত ও দাক্ষিণাত্য-রাজগণের সহিত বিবাদে অতিবাহিত হইয়াছিল। গাঙ্গেয়দেব ও কর্ণদেবকে লইয়া দশম শতাব্দীর মধ্যভাগ হইতে একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ শেষ পর্য্যন্ত, শত বর্ষের ইতিহাস রচিত হইয়া থাকে। এই সময়ে গাঙ্গেয় ও কর্ণ ব্যতীত চোলবংশীয় রাজেন্দ্র চোল, কল্যাণের চালুক্যবংশীয় দ্বিতীয় জয়সিংহ প্রভৃতি দাক্ষিণাত্য-রাজগণ উত্তরাপথ আক্রমণ করিয়াছিলেন। এই রাষ্ট্র-বিপ্লবের যুগে মহীপালদেব পিতৃরাজ্য উদ্ধার করিয়া উত্তরাপথে যে নূতন সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তাহাই তাঁহার অসামান্য প্রতিভার অদ্বিতীয় পরিচয়।
১০৫৯ বিক্রমাব্দে (১০০২ খৃষ্টাব্দ) যশোবর্ম্মদেবের পুত্র ধঙ্গদেব রাঢ় ও অঙ্গ বিজয় করিয়াছিলেন[২]। খজুরাহো গ্রামে বিশ্বনাথ-মন্দিরে আবিষ্কৃত ধঙ্গদেবের শিলালিপি হইতে এই কথা অবগত হওয়া যায়।