পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ।
২৬১

বুদ্ধিষ্ট টেক্সট্ সোসাইটীর পত্রিকায় গৌড়েশ্বরের সহিত কর্ণদেবের যুদ্ধের বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছে। “দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান যখন বজ্রাসনে, অর্থাৎ—মহাবোধিতে বাস করিতেছিলেন, সেই সময়ে মগধ-রাজ নয়পালের সহিত তীর্থিকধর্ম্মাবলম্বী কর্ণ্য-রাজের বিবাদ হইয়াছিল। কর্ণ্য-রাজ মগধ আক্রমণ করিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি নগর অধিকার করিতে না পারিয়া কতকগুলি বৌদ্ধ বিহার মন্দিরাদি ধ্বংস করিয়াছিলেন। পরে নয়পালের সেনা জয়লাভ করিলে কর্ণ্য-রাজের সেনাগণ যখন নিহত হইতেছিল তখন শ্রীজ্ঞান তাহাদিগকে আশ্রয় প্রদান করিয়া রক্ষা করিয়াছিলেন। তাঁহার চেষ্টায় যুদ্ধ স্থগিত হইয়া সন্ধি স্থাপিত হইয়াছিল[১]।” তিব্বতীয় সাহিত্যের কর্ণ্য-রাজ যে চেদিরাজ কর্ণ, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। শ্রীযুক্ত মনোমোহন চক্রবর্ত্তী সর্ব্বপ্রথমে এই মত প্রকাশ করিয়াছিলেন[২]। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ তাহা সমর্থন করিয়াছেন[৩]; শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসুও এই মতাবলম্বী[৪]। নয়পালের সহিত কর্ণের সন্ধি স্থাপিত হইলে নয়পালের পুত্র বিগ্রহপালের সহিত কর্ণের কন্যা যৌবনশ্রীর বিবাহ হইয়াছিল।

 নয়পালদেবের রাজ্যের দুইখানি শিলালিপি ও একখানি প্রাচীন গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে। গয়ানগরে কৃষ্ণদ্বারিকা মন্দিরে আবিষ্কৃত একখানি শিলালিপি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, পরিতোষের পৌত্র, শূদ্রকের পুত্র, বিশ্বাদিত্য, নয়পালদেবের পঞ্চদশ রাজ্যাঙ্কে জনার্দ্দনের একটি মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন[৫]। এই বিশ্বাদিত্য বা বিশ্বরূপ উক্ত

  1. Journal of the Buddhist Text Society, Vol. I, p. 9.
  2. Journal of the Asiatic Society of Bengal, 1900, pt. I, p. 192.
  3. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৪৫।
  4. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (রাজন্যকাণ্ড), পৃঃ ১২৫, পাদটীকা, ১৯।
  5. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১১১-১৫।