পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

ছিলেন[১]। রাজ্যাভিষেকের প্রথম ত্রয়োদশ বৎসর মধ্যে মগধের অধিকাংশ তাঁহার অধিকারভুক্ত হইয়াছিল, কারণ ১১৮৩ বিক্রমাব্দে তিনি মগধদেশের একখানি গ্রাম জনৈক ব্রাহ্মণকে দান করিয়াছিলেন। উক্ত বর্ষের জ্যৈষ্ঠমাসের কৃষ্ণা একাদশীতে গোবিন্দচন্দ্রদেব রবিবাসরে কান্যকুব্জে গঙ্গাস্নান করিয়া মণিঅরি পত্তলায় অবস্থিত পাদোলি ও গুণাবে গ্রাম গণেশ্বর শর্ম্মা নামক কাশ্যপগোত্রীয় জনৈক ব্রাহ্মণকে দান করিয়াছিলেন[২]। এই তাম্রশাসনখানি এক্ষণে পাটনা জেলায় জনৈক ব্রাহ্মণের নিকট আছে। অধ্যাপক শ্রীযুক্ত যদুনাথ সরকার আমাকে ইহার একখানি চিত্র প্রদান করিয়াছিলেন। এই তাম্রশাসনে উল্লিখিত মণিঅরি এবং গঙ্গা ও শোণের সঙ্গমরূলে অবস্থিত বর্ত্তমান মনের বা মুনের গ্রাম অভিন্ন। মুসলমান বিজয়কালে মহম্মদ বখ্‌তিয়ার তাঁহার ভিওয়ালি গ্রামের জায়গীরে থাকিয়া মনের ও বিহার লুণ্ঠন করিতে আসিতেন। ১২০২ বিক্রমাব্দে গোবিন্দচন্দ্র অঙ্গদেশের কিয়দংশ পর্য্যন্ত অধিকার করিয়া মুদ্গগিরি বা মুঙ্গের পর্য্যন্ত অগ্রসর হইয়াছিলেন। উক্ত বর্ষের বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষে অক্ষয় তৃতীয়ায় গোবিন্দচন্দ্রদেব মুদ্গগিরিতে গঙ্গাস্নান করিয়া জনৈক ব্রাহ্মণকে একখানি গ্রাম দান করিয়াছিলেন[৩]। এই তাম্রশাসনদ্বয় গোবিন্দচন্দ্র কর্ত্তৃক মগধ ও অঙ্গ অধিকারের স্পষ্ট প্রমাণ। গোবিন্দচন্দ্র

  1. Epigraphia Indica, Vol. VIII, App. I, p. 13, list no. 12.
  2. অধ্যাপক শ্রীযুক্ত যদুনাথ সরকার আমাকে জানাইয়াছিলেন যে, এই তাম্রশাসনখানি সত্বর এসিয়াটিক সোসাইটীর পত্রিকায় প্রকাশিত হইবে। ১৯২২ খ্রীষ্টাব্দে পরম স্নেহাস্পদ অধ্যাপক শ্রীমান্ ননীগোপাল মজুমদার এম, এ, ইহা প্রকাশ করিয়াছেন।—(Journal & Proceedings of the Asiatic Society, Bengal, Vol XVIII, 1922, pp. 81-84). তৎপূর্ব্বে পাণ্ডেয় রামাবতার শর্ম্মা ইহা Journal of the Bihar & Orissa Research Society নামক পত্রে প্রকাশ করিয়াছিলেন—Vol II, pp. 441-47.
  3. Epigraphia Indica, Vol. VII, p. 98.