হইয়া চাহমান-বীর ক্রমশঃ অবসন্ন হইয়া পড়িলেন। তখন অন্যান্য আর্য্যাবর্ত্ত-রাজগণের মধ্যে কেহই তাঁহার সাহায্যার্থ অগ্রসর হন নাই। স্মিথ বলিয়াছিলেন যে, মুসলমানগণের আক্রমণের আশঙ্কায় আর্য্যাবর্ত্ত-রাজগণ কিয়ৎকালের জন্য গৃহ-বিবাদ স্থগিত রাখিয়া মুসলমানগণের বিরুদ্ধে একত্র দণ্ডায়মান হইয়াছিলেন[১]; কিন্তু এই উক্তি কোন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হয় নাই। আর্য্যাবর্ত্তের কোন রাজা পৃথ্বীরাজের পক্ষাবলম্বন করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। ১৭৬১ খৃষ্টাব্দের পাণিপথের প্রাচীন যুদ্ধক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র-শক্তি যখন সমবেত মুসলমান-রাজগণের চেষ্টায় বিধ্বস্ত হইয়াছিল তখনও রাজপুত-রাজগণ হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্রধারণ করেন নাই। জাঠগণ মহারাষ্ট্রীয়গণকে সাহায্যের পরিবর্ত্তে বারংবার তাঁহাদিগের শিবির লুণ্ঠন করিয়া আহ্মদ শাহ আবদালীর সাহায্য করিয়াছিল। সেইরূপ খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষপাদে মুসলমানগণের আক্রমণে চাহমান-রাজ যখন আত্মরক্ষার জন্য কাতর হইয়াছিলেন তখন পূর্ব্বকৃত অপমানের প্রতিশোধ লইবার জন্য চন্দেল্ল-রাজ নিশ্চিন্তমনে কালঞ্জর দুর্গে দিন যাপন করিতেছিলেন। গর্ব্বিত গোবিন্দচন্দ্রের পৌত্র জয়চ্চন্দ্র তাঁহার সাহায্যার্থ অগ্রসর হওয়া কর্ত্তব্য মনে করেন নাই, মগধে পাল-রাজবংশের শেষ রাজা আত্মরক্ষার চিন্তায় ব্যস্ত ছিলেন এবং গৌড়ের সেনবংশীয় রাজা অধিকার-বিস্তারের চিন্তায় অথবা কবিতা রচনায় দিবস অতিবাহিত করিতেছিলেন। ১১৯২ খৃষ্টাব্দে পৃথ্বীরাজ গোর-রাজ মহম্মদ-বিন-সামকে পরাজিত করিয়াছিলেন, কিন্তু পরবৎসর তিনি স্বয়ং পরাজিত হইয়াছিলেন। পৃথ্বীরাজের মৃত্যুর পরে দিল্লী হইতে আজমীর পর্য্যন্ত সমস্ত ভূভাগ অধিকার করিতে
- ↑ V. A. Smith, Early History of India, 3rd Edition, p. 389.