পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র
১১২

কমিটি গঠন করা হয়। ঐ সনের ডিসেম্বর মাস পর্য্যন্ত উক্ত কমিটির কার্য্য হয়। পরে নূতন কমিটি গঠিত হয়। শ্রীযুত বেতাই নূতন কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন। ফণ্ড খোলার পর ভারতীয়দের নিকট হইতে আশ্চর্য্য রকমের সাড়া পাওয়া যায়। ১৯৪৪ সালের ৫ই এপ্রেল যখন আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক খোলা হয়, তখন পূর্ব্ব এশিয়ার প্রত্যেক ভারতীয় উহাকে সাহায্য করিতে আরম্ভ করেন। ব্যাঙ্ক স্থাপনের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ৩০০টি একাউণ্ট খোলা হয়, এবং ডিপজিটের পরিমাণ হয় ২০ হইতে ২৫ লক্ষ টাকা। দুই মাসের মধ্যে ব্যাঙ্কের দুইটি শাখা খোলা হয়। কিছুদিন পরে টঙ্গি নামক স্থানে আর একটি শাখাও খোলা হয়।

 ব্যাঙ্কের অন্যতম ডিরেক্টর শ্রীযুত দীননাথ বলেন যে নেতাজী কর্ত্তৃক আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠার পর আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক স্থাপন একান্ত প্রয়োজন হইয়াছিল। দুইটি উদ্দেশ্যে নেতাজী এই ব্যাঙ্ক স্থাপন করেন। প্রথমতঃ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণরূপে জাপানীদিগের সাহায্য-নিরপেক্ষ হইতে চাহিয়াছিলেন। দ্বিতীয়তঃ পূর্ব্ব এশিয়ার ভারতীয়দের অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রকে তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাহায্যার্থে নিয়োগ করিতে চাহিয়াছিলেন। জাপানীরা তাঁহার এই মনোভাব মোটেই পছন্দ করিতনা। তাহারা সর্ব্বদা চেষ্টা করিত অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভারতীয়েরা যেন তাহাদের অধীন হইয়া চলে। কিন্তু এবিষয়ে নেতাজী দৃঢ় মনোভাব পোষণ করিতেন।