পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wor বারীতেন্দ্রর আত্মকাহিনী তিনি সবই টের পাইয়াছিলেন। তিনি বুঝিলেন, এরা না-জানি-কি একটা দানবে কাণ্ড বাধাইয়া বসিবে, পরিণাম বিচার না করি। আপনাদের ক্ষুদ্র অহমিকার শক্তিতে অন্ধ-বিশ্বাসী। এরা দৃঢ় ত্বরিৎ পদে চলিয়াছে, একটা সৰ্ব্বনাশ লক্ষ্যে-নিশ্চিত মৃত্যুর কবলে। ভগবদ-জ্ঞানীর কথা সকলেই শুনিয়াছে, সে যে কি অপূর্ব মানুষ, কোন অচিন সত্যে তাহার বাসা, তাহা প্ৰত্যক্ষতঃ জানে কয় জন ? যংলব্ধ চাপরং লাভং মন্যতে নাধিকম ততঃ, যাহাকে পাইয়া আর কোন ঐশ্বৰ্য্যই অধিক বলিয়া মনে হয় না, সেই আপ্তজনের পরশমণি পাইয়া লেলের কৰ্ম্মের মোহ ছিল না । সে কাজ করিত, কাজের লালসায় নয়, অন্তর দেবতার ইঙ্গিতে-তাহার বাণী শুনিয়া । লেলে আমায় তাহাই দিতে চাহিলেন, একদিন অনেক বুঝাইয়া বলিলেন, “দেখো, তোমরা এ পথ কিসের জোরে ধরেছ ? ভারত স্বাধীন একদিন হবেই, তা’ আনিবাৰ্য্য ; কাল প্ৰাতে উদয়াচলের কোলে সোনার থালা সূৰ্য্য উঠবে, এ যেমন আনিবাৰ্য্য ও অবশ্যম্ভাবী, ভারতের ভাবী স্বাধীনতাও তাই । কিন্তু এ পথে নয়।” আ । তবে কোন পথে ? লে। দেশকে-মানুষকে মুক্ত করতে হলেই কি তা রক্তারক্তি ছাড়া হয় না ? ভারত বিনা রক্তপাতেই মুক্ত হবে। আমি । কি করে ? লে। কি করে, তাই যদি দেখবে তো আমার সঙ্গে এসে । একটা নির্জন পাৰ্ব্বতা গুহায় আমি তোমায় বসিয়ে দেব, খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা এমন করে দেবো, তুমি সেইখানে বসেই সব পাবে। ছয় মাস সেখানে সাধনা করি ; আমি বলছি, ভগবানের আদেশ পাবে। যারা দেশের নেতা হতে যাচ্ছে, এত কোটি মানুষের ভাগ্য হাতের মুঠোয় নিতে যাচ্ছে, তাদের অন্ধ হয়ে কাজ করলে ত চলবে না । দেখে পথ চলো, ভগবানের আদেশ নিয়ে পথ চলো, তাহলে ভুল আর হবে না, র্যার কাজ তিনি শক্তি দেবেন, পথ দেখাবেন।