পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ზ8\ტ বারীতেন্দ্রর আত্মকাহিনী মনের দুঃখে হাস্য করিলাম। মানুষ যে দুঃখেও হাসে তাহা আমার জীবনে এই প্ৰথম আরম্ভ হইল। হঠাৎ আমাকে লইয়া তাহারা সেইখানে উপস্থিত হইল যেখানে জিনিসপত্র পোতা ছিল। দেখিলাম মাটি খোড়া, আমার এত সাধের গোপন করা বোমা, রিভলভার সবই উষার আলোয় ট্যাঙ্কের মধ্য হইতে উকি মারিতেছে। কুলের অসূৰ্য্যাম্পশ্যা কুলবধূকে রাজপথে দাড়াইয়া অট্টহাস্য করিতে দেখিলে, হিন্দুর সমাজপতি বোধহয় আমার অপেক্ষা বিস্মিত ও উদভ্ৰান্ত হয় না। আমার মন বলিল, “ভায়া। এবার তোমার খেলা ভবের হাটে বুঝি উঠলো।” অভিমানে আমার চক্ষে জল ভরিয়া আসিল, রাগে ফুলিয়া ফুলিয়া অন্তরাত্মা বলিতে লাগিল, “ঠাকুর। সব ভেঙে দিলে, সব ভেঙ্গে দিলে ? তবে নেও, আমিও রিক্ত হয়ে সব দেব।” সেই রাগে যেখানে যাহা ছিল আমি দেখাইয়া দিলাম ; বিভূতি ও শচীনকে লইয়া টানা হঁ্যাচড়া করিতেছে, ভয় দেখাইতেছে দেখিয়া একটা কাগজ চাহিয়া লইয়া আমি লিখিয়া দিলাম, “আমি সব করিয়াছি, সব কিছুরই জন্য আমি দায়ী ; এরা সব নির্দোষী।” পড়িয়া একটা সার্জেণ্ট বলিল, “Noble fellow ” সে স্তুতিও আমার কাণে আজ বিষ ঠেকিল । তাহার পর রামসদয় মুখুয্যে আসিলেন, ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশন বিভাগের বড় সাহেব প্লাউডেন আসিলেন। প্লাউডেন বলিলেন, “বারীন্দ্র । তুমি কত বড় লোকের ছেলে, তুমি এমন কাজ করেছ ? "আমি তোমার বড়দাদা বিনয়কে খুব চিনি। ছিঃ! ছি! একি কাণ্ড ।” আ । সাহেব, আমি তো সব অপরাধ নিজের ঘাড়ে নিচ্ছি, সব নিজেই দেখিয়ে, দিলাম। তবে আমায় এমন টানা হ্যাচড়া করছে। কেন, সার্জেণ্ট গালাগালি দিচ্ছে কেন ? A man in your position should not expect too much. তোমার অবস্থায় যে পড়েছে, তার এর বেশী ভদ্রতা আশা করা উচিৎ নয়।