পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t) বারীদ্রের আত্মকাহিনী এইবার তাহা হাতে কলমে করিয়া দেখাইব বলিয়াই, আমরা একদল কাগজ হইতে আজ হইতে বিদায় লইয়া চলিলাম।” “যুগান্তর” কি বলিত না বলিত গবৰ্ণমেণ্ট তাহ জানিতেন, আজ হইলে আমন কথা কেহ তিন বারের বেশী বলিয়া পার পায় না। ধৃত আষ্টেপৃষ্ঠে বন্ধ ও ঘেরাও হইয়া হাড়গোড় ভাঙ্গা দ অবস্থায় কাঠগড়ায় হাজির হয় । সে দিন তাহা কেন হইত না ? তাহার একমাত্র কারণ এই যে, অনেককাল নির্বিববাদে সুখে রাজত্ব করিবার ফলে কৰ্ত্তারা দিব্য আরামে নাকে সরিষার তৈল সংযোগে ভোগ-নিদ্রালিস দশায় অবস্থান করিতেছিলেন। সে নিদ্রা আর এক বৎসরব্যাপী হইলে কি ঘটিত বলা যায় না, কারণ আমরা হাজার আনাড়ী হইলেও ইংরাজি কেতাব প্রসাদাৎ রাজত্বরূপ পোয়ালগাদায় আগুন লাগাইবার অনেক কল কৌশল শিখিয়াछिलांभ । আমাদের বাগানে কলাটা, মুলাটা, ফলটা, পাকড়টার লোভে একদল হনুমান মাসে তিনবার কি চারবার করিয়া দেখা দিত । মুরারিপুকুর অঞ্চলময়ই কেবল সারি সারি বাগান, এই রামানুচরদল পালাক্রমে এইসব বাগানে এক দুই দিন বাস করিত এবং গাছে গাছে কায়ক্লেশে দিনগুজরান করিত । আমরা একটা ছোট রাইফেল লইয়া তাহাদের পালের গোদাকে ঘায়েল করিবার প্রয়াস প্রায়ই করিতাম । গ্রেপ্তার হইবার কয়েকমাস পূর্ব হইতেই দেখিতাম, ঠিক পাশের বাগানে একদল লোক রোজ বসিয়া হাল্লা করে ও আডিডা দেয় । আমরা জানিতাম না যে, এই বাগান পুলিশে ভাড়া লইয়াছে, আমরা ভাবিতাম-ইহারা জুয়াড়ী, পুলিশের জ্বালায় এইখানে একটু নির্দোষ আমোদ উপভোগ করিয়া নশ্বর জীবনের রসাস্বাদ করে মাত্র। এই হইল আমাদের দ্বিতীয় নম্বর গাফলতি, প্ৰথম নম্বর যে “যুগান্তরে”র স্তম্ভে সাধারণ নোটিশ দিয়া গুপ্তসমিতি গড়িতে নাম, তাহা পূর্বেই এক রকম বলিয়া চুকিয়াছি।