পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O আরণ্যকাণ্ড হে রাক্ষসেশ্বর! আমি রামশুন্য প্রদেশে কেবল সেই রামকে দর্শন করি ; এমন কি, স্বপ্নেও র্তাহাকে দর্শন করিয়া জাগরিতের ন্যায় ইতস্ততঃ ধাবিত হই। তে রাবণ ! আমি তোমাকে আর অধিক কি বলিব, আমি রাম হইতে এরূপ ভয়াত্রান্ত হইয়াছি যে, রত্ন, রথ প্রভৃতি যে সমুদায় শব্দের আদিতে রকার আছে, সেই সকল শব্দও আমার ভয় সমুখপাদন করে। আমি বিশেষরূপে সেই রঘুনন্দন রামের ক্ষমতা অবগত আছি ; অতএব তাহার সহিত যুদ্ধ করা তোমার উচিত নহে ; তিনি বলি বা নমুচিকে বিনষ্ট করিতে পারেন। হে রাবণ ! তুমি রামের সহিত যুদ্ধই কর বা না কর, যদি আমাকে দেখিতে অভিলাষ কর, তবে আমার সমীপে র্তাহার কথা বলিও না । ইহলোকে ধৰ্ম্মানুষ্ঠায়ী যোগযুক্ত হইয়া, বহুসংখ্য ব্যক্তিও পরের অপরাধে সপরিবারে বিনষ্ট হইয়া থাকেন ; সেইরূপ আমাকেও তোমার অপরাধে বিনষ্ট হইতে হইবে । হে নিশাচর ! তোমার যাহা অভিরুচি হয়, তাহাই কর, কিন্তু আমি তোমার অনুগমন করিব না ! সেই মহাতেজ মহাবুদ্ধি মহাবল রাম যথার্থই নিশাচরদিগের যমস্বরূপ ; যদিও পূর্লে জনস্থাননিবাসী দুর্বত্ত খর, শূৰ্পণখার জন্য তৎকর্তৃক বিনষ্ট হইয়াছে, কিন্তু এ বিষয়ে তাহার অপরাধ কি, তাহা তুমি সত্য করিয়া বল। তুমি আমার বন্ধু,তজ্জন্তাই আমি তোমার মঙ্গলার্থে এই সত্য বাক্য বলিলাম। যদি তুমি আমার বাক্যের অনুবত্তী না হও, তবে সবান্ধবে বাণ সকল দ্বারা রাম কর্তৃক যুদ্ধেবিনষ্ট হইয়া, তোমাকে প্রাণ পরিত্যাগ করিতে হইবে। ১-২৫ চত্বরিংশ সগ যেরূপ মৃত্যুকাম ব্যক্তি ঔষধ গ্রহণ করে না, তক্রপ সেই কাল-প্রেরিত নিশাচরপতি রাবণ মঙ্গলজনক ও যুক্তিসঙ্গত বাক্যবাদী মারীচ কর্তৃক উপদিষ্ট হইয়া O(? వ তদীয় যুক্তিসঙ্গত সমুচিত বাক্য গ্রহণ করিল না। প্রত্যুত তাহাকে এই অযথোচিত পরুষ-বাক্য বলিল, --তোমার বাক্য উষর ভূমিতে উপ্ত বীজের মত নিতান্ত নিফল । আমি তদারা পাপাচারী মুখ মানব রামের সহিত যুদ্ধ করিতে ভীত হইবার পাত্র নহি ।” যে ব্যক্তি সামান্য স্ত্রীর বাক্য শুনিয়া, মাত, পিতা, রাজ্য ও সুহৃদৃবর্গ পরিত্যাগ-পূর্বক বনচারী হইয়াছে, আমি তোমার সন্নিধানে অবশ্যই যুদ্ধে খরবিনাশী সেই রামের প্রাণ হইতে প্রিয়তম ভার্গ্যাকে হরণ করিব । ওহে মারীচ, আমার হৃদয়ে ঈদৃশী বুদ্ধ নিশ্চিত রহিয়াছে, ইন্দ্রের সহিত সুরাহ্বরগণও তাহার অন্যথা করিতে পরিবেন না। যদি আমি এই কার্য্যে কর্তব্যতা অবধারণার্থে ইহার দোষ-গুণ, উপায় বা ক্ষতি কি, ইহা তোমাকে জিজ্ঞাসা করিতাম, তবে তোমার এরূপ বাক্য বলা সমুচিত হইত। যে জ্ঞানবান মন্ত্রী য় ঐশ্বর্ণ্যে অভিলাষী হন, তিনি রাজা কর্তৃক জিজ্ঞাসিত হইয়া, কৃতাঞ্জলিপুটে স্বীয় বক্তব্য বিষয় নিবেদন করিবেন। যে হেতু ভূপতিদিগের সমীপে উপচারযুক্ত, মনোহর, মঙ্গলজনক, অবিরুদ্ধ বাক্যই বলা বিধেয় । মঙ্গলজনক বাক্যও যদি তাপমান-সহকারে অভিহিত হয়, তবে মাননীয় ভূপতি সেই সম্মানরহিত বাক্যে অভিনন্দন করেন না। হে নিশাচর। অতিতেজ মহাত্মা ভূপতিরা অগ্নি, ইন্দ্র, চন্দ্র, যম ও বকণ, এই পঞ্চদেবতার রূপ ধারণ করিয়া থাকেন ; উষ্ণতা, বিক্রম, শুভদৰ্শনত, দণ্ড ও প্রসন্নত ধারণ করিয়া থাকেন ; অতএব সকল অবস্থাতে নিরন্তর তাহাদিগের সম্মান ও অর্চনা করা কর্তব্য। তুমি ধৰ্ম্মবিষয়ে অনভিজ্ঞ হইয়া কেবল মায়ার অধীন হইয়াছ। তজ্জন্য তোমার গৃহে অভ্যাগত হইলেও আমার পূজা না করিয়া দৌরাত্ম্য ১। যদিও আমি রামের সহিত যুদ্ধানর্থ হই, তথাপি তাহার অপকারের জন্ত তাহার ভার্ষ্য সীতাকে অপহরণ করাই মাত্র এ ক্ষেত্রে একমাত্র প্রতীকার । স্বী