পাতা:বাহ্যবস্তুর সহিত মানব প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার (প্রথম খণ্ড).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপক্রমণিকা

 আমাদিগের দুঃখ-নিবৃত্তি ও সুখোৎপত্তির উপায় বিবেচনা করিতে হইলে আমাদিগের কিরূপ প্রকৃতি, ও বাহ্য বস্তু সমুদায়ের সহিতই বা তাহার কিরূপ সম্বঙ্গ তাহা অবগত হওয়া আবশ্যক। মনুষ্য এই ভূলোকে সর্ব্ব-জীব-শ্রেষ্ঠ। যে সকল গুণে তিনি এই পৃথিবীর রাজা হইয়াছেন, তাহা ভূমণ্ডলে আর কোন জন্তুরই নাই, এবং অন্য কোন জন্তুতে তাদৃশ পরস্পরবিরুদ্ধ গুণও সৃষ্টি করা যায় না। এক বিষয়ে তাহাকে পিশাচ তুল্য বোধ হয়, আর বিষয়ে তাহাকে দেব তুল্য বলিলেও বলা যায়। যখন তাহার রণস্থলবর্ত্তিনী সংহার মূর্ত্তি ও নানা প্রকার পাপাচরণ মনে করা যায়, তখন তাহাকে অসুরাবতার বলিয়া জ্ঞান হইতে পারে। কিন্তু তাঁহার অদ্ভত বিদ্যা, কারুণ্য স্বভাব, স্বদেশের হিতোৎসাহ, বিশ্বপত্তির মহিমানুশীলন এই সমস্ত গুণ আলোচনা করিলে বোধ হয়, তিনি কোন পরম সুখাস্পদ স্বর্গলোক হইতে অবতরণ করিয়া পৃথিবীর হিতার্থ জন্ম গ্রহণ করিয়াছেন। আর কোন জন্তুতেই এরূপ পরস্পরবিরুদ্ধ গুণসমূহের একত্র সমাবেশ উপলব্ধ হয় না।

 ছাগ ও মেষের যাদৃশ দুর্বল প্রকৃতি এবং নিরুপদ্রব মৃদু স্বভাব, বাহ্য বিষয়ের সহিত তাহাদিগের তদুপযোগী সম্বন্ধ ঘটনা হইয়াছে। তাহার মনুষ্যের আশ্রয়ে থাকিয়া ফল পত্রাদি আহার করিয়া পরিতৃপ্ত হয়, এবং মনুষ্যের যত্বে প্রতিপালিত হইয়া নির্ব্বিঘ্নে কালযাপন করে। ব্যাঘ্র অতি দুর্দ্দান্ত হিংস্র জন্তু,