পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S)8 <á> কুমুনিৰ্ণিমেঘ চোখ মেলে চুপ ক’রে দাড়িয়ে রইলো, একটি কথাও বললে না। মধুসুদন ওর মৌন দেখে আরো রেগে গেলো। মনের গভীর তলায় এই মেয়েটির মন পাবার জন্তে একটা আকাঙ্ক্ষা জেগেচে ব’লেই ওর এই তীব্ৰ নিস্ফল রাগ। বলে উঠলো, “আমি কাজের লোক, সময় কম, হিসটারিয়া-ওয়ালী মেয়ের శిశా ফুরসৎ আমার নেই, এই স্পষ্ট ব’লে কুমুখীরে ধীরে বললে, “তুমি আমাকে অপমান করতে চাও ? হার মানতে হবে। তোমাত্র অপমান মনের মধ্যে 6नदी नीं।” 町 কুমু কাকে এ সব কথা বলচে ? ওর বিস্ফারিত চোখের সামনে কে দাড়িয়ে আছে ? মধুসুদন অবাক হ’য়ে গেলো, ভাবলে এ মেয়ে ঝগড়া করে না কেন ? এর ভাবখানা कि ? মধুসুদন বক্রোক্তি ক’রে বললে, “তুমি তোমার দাদার তাকে এক হাটে কিনে আর এক হাটে বেচাতে পারি।” ও যে কুমুর দাদার চেয়ে শ্রেষ্ঠ এ কথা কুমুর মনে দেগে দেবার জন্যে মুঢ় আর কোনো কথা খুঁজে পেলে না। কুমু বললে, “দেখো, নিষ্ঠৱ হও তোহােয়ো, কিন্তু ছোটাে হােয়ে না।” বলে সোফার উপর বসে পড়ল। কর্কশাস্বরে মধুসুদন বলে উঠলোঁ, “কী! আমি ছোটাে! আর তোমার দাদা আমার চেয়ে বড়ো ?” ” [ পৌষ মধুসুদন ব্যঙ্গ ক’রে বললে, “বড়ো জেনেই এসেচ, না, টাকার লোভে ?” তখন কুমুসোফা থেকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে খোলা ছাদে মেজের উপর গিয়ে বসলো। কলকাতায় শীতকালের কৃপণ রাত্রি, ধোঁয়ায় কুয়াশায় ঘোলা, আকাশ অপ্ৰসন্ন, তারার আলো যেন ভাঙ্গা গলার কথার মতো। কুমুৱা মন তখন অসাড়, কোনো ভাবনা নেই, কোনো বেদনা নেই। একটা ঘন কুয়াশার মধ্যে সে যেন লুপ্ত হ’য়ে গেছে। কুমু যে এমন ক’রে নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যাবে মধুসুদন এ একেবারে ভাবতেই পারেনি। নিজের এই পরাভাবের জন্তে সকলের চেয়ে রাগ হচ্চে কুমুর দাদার উপর। শোবার ঘরে চৌকির উপরে বসে পড়ে শূন্য আকাশের দিকে সে একটা ঘুষি নিক্ষেপ কবুলে। খানিকক্ষণ ব’সে থেকে ধৈৰ্য্য। আর রাখতে পারলে না। ধড়ফড় ক’রে উঠে ছাদে বেরিয়ে ওর পিছনে গিয়ে ডাকলে, “বড়ো বে।” কুমু চমকে উঠে পিছন ফিরে দাড়ালে। ‘ঠাণ্ডায় হিমে বাইরে এখানে দাড়িয়ে কী করচ ? চলে ঘরে ।” কুমু অসঙ্কোচে মধুসূদনের মুখের দিকে চেয়ে রইলো। মধুসূদনের মধ্যে যেটুকু প্ৰভুত্বের জোর ছিল তা গেলে উড়ে। কুমুর বঁা:হাত ধ’রে আন্তে আন্তে বলে, “এসো ঘরে।” কুমুর ডান হাতে তার দাদার আশীর্বাদের সেই টেলিগ্রাম ছিল সেটা সে বুকে চেপে ধৰ্ব্বল। স্বামীর হাত থেকে হাত টেনে নিলে না, নীরবে ধীরে ধীরে শোবার ঘরে ফিরে গেলো। (खकभभs) গত মাসের বিচিত্রায় প্ৰকাশিত যোগাযোগে ৭৯৮ পৃষ্ঠার ১ম স্তম্ভের ৯ পঙক্তিতে যে বাক্য আরম্ভ হইয়াছে তাহা এইরূপ হইবে,-কিন্তু ঐ যে চাদরে-অ্যাচলের গ্ৰন্থি, ওর সৃষ্ট জীবন্মৃত্যুর জয়তোরুণ যদি মাপা যায়। তবে তার চুড়া কোন নরকে গিয়ে ঠেকবে।