পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S SàR বিচিত্র-জগৎ এই শ্রেণীর ডোঙা এখন আর বড় একটা তৈরি হয় না, হোলেও পূর্বের মত মজবুত জিনিষ আর এখন পাওয়া যায় না। ডোঙা তৈরীর শিল্প লোকে ভুলে যাচ্ছে। জোড়া-ডোঙার ব্যবহার তো প্ৰায় উঠেই গিয়েচে । খুব বড় ডোঙ্গাও গত শতাব্দীর শেষভাগ থেকে প্ৰায় অন্তহিত হয়েচে । সমুদ্রের যে খাড়ির বাহিরে পাথরের বাঁধ অবস্থিত, তারই উপকূলে অনেকগুলি প্রাচীনদিনের মন্দির এখনও দেখা যায়। মাটি ও পাথরের বড় বড় বেদীর ওপরে এই সব মন্দির তৈরী। সেকালে মন্দিরের দেবতার সম্মুখে নরবলি দেওয়ার প্রথা.প্ৰচলিত ছিল। তারপর সেই নিহত ব্যক্তির দেহ পুড়িয়ে সকলে মিলে মহা আনন্দে ভক্ষণ করতো। একটা মন্দিরের এখন ভগ্নাবস্থা, এরই উচ্চবেদীর এক প্রান্তে রাটু রসি তার দরবার গৃহ নিৰ্ম্মাণ করেচেন। রাজ্য শাসন সংক্রান্ত গুরুতর বিষয়ে তিনি এখানে দ্বীপের প্রধান ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করেন । দরবার-গৃহ বলতে সাধারণতঃ আমাদের মনে যে ছবি জাগে, এ সে ধরণের কিছু নয়। এ ঘরের SiS SDDDSELKYSYS BDYYzS KLD KLuLLS ঘরের মেজেতে মাদুর বিছানো । এখন সেখানে সভা ভঙ্গের পরে কাভা নামক পানীয় অভ্যাগতদের মধ্যে বিতরিত হয় এবং মাঝে মাঝে গান বাজনাও इञ् । প্ৰাচীন দিনের অনেক প্ৰথা এখনও পরিবৰ্ত্তিত আকারে মাধাউ দ্বীপে প্ৰচলিত আছে, যদিও মিশনারীদের খরদৃষ্টি ও সতর্কতার ফলে ঐ সব প্ৰাচীন রীতিনীতির ভয়ানকত্ব সম্পূর্ণরূপেই দূর হয়েচে । রীতিনীতি বজায় আছে, কিন্তু খৃষ্টধৰ্ম্ম প্রচারের পর থেকে তাদের ওপর সভ্যতার একটী প্ৰলেপ পড়েছে। খুব লক্ষ্য করে দেখলে প্রলেপটুকুর ক্ষীণ আবরণ ভেদ করে প্রাচীন কালের প্রথার আদিম রূপটি এখনও বার হয়ে আসে। প্ৰতি বৎসর ক্ষেত হইতে নারিকেল ও চুপড়ি আলুলইয়া ফিরিয়াছে। একটী নির্দিষ্ট সময়ে भांलांछे छोgoद्ध भिeनी গাত্রাবরণটি নারিকেল পত্রে রচিত । সম্প্রদায়ের বাৎসরিক সভার - অধিবেশন হয় এই দরবার গৃহেই। বহুদূর থেকে গ্ৰাম্যলোকের মাবাউ সহরে এই উপলক্ষে :জমা হয় . ও কয়েক সপ্তাহ ধৱে প্ৰাৰ্থন, ভজনগীত, নৃত্য, ভোজ বাজি পোড়ানো ইত্যাদি চলতে থাকে। খুব বড় মেলা বসে এবং দেশীয় নানাবিধ শিল্পদ্রব্যও প্ৰদৰ্শিত হয়। সকলেই মিশনৱী ফণ্ডে এই সময়ে কিছু কিছু অর্থ দান করে। ভোজের মধ্যে বেশী কিছু আড়ম্বর নেই। গ্ৰাম থেকে আসবার সময়ে প্রত্যেকেই নিজের সাধ্যমত কিছু কিছু মিষ্ট আলু, সাবু, কুটীফল ও কাভা প্ৰস্তুতের জন্যে ইয়ানসোনা মূল সংগ্ৰহ করে আনে। যাদের অবস্থা কিছু ভাল, তারা একটা ক’রে শূকর আনে। এই শূকর রন্ধনের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ প্রাচীন প্রথানুযায়ী নিষ্পন্ন হয়ে থাকে। একটা হৃষ্ট পুষ্ট শূকর বেছে নিয়ে তার মাথায় ডাণ্ডা মেরে বধ করা হয়। তারপর তার পেট চিরে পেটের মধ্যে তপ্ত পাথরের মুড়ি পূরে পেট আবার সেলাই করে দেওয়া হয়। ঝিনুক ও প্রবালের খোলা দিয়ে তার গায়ের লোম চেচে ফেলা হয় ।