পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেপ্ৰিন্দ্বীপের পাখীর আডা * ২৫৩ ভারই পাখীকে ভুলিয়ে জালে আনবার জন্য যে উপায় অবলম্বিত হয়, তা অত্যন্ত হৃদয়হীন। কতকগুলি পক্ষিণীর চোখ গরম সুচ বিধিয়ে নষ্ট করে অন্ধ করা হয়-বহুকাল থেকে ওদেশের লোকে জানে অন্ধ পাখীর ডাক থামে না-সে দিন রাত সমানভাবে ডাকবে। ভারুই পাখী পক্ষিণীর ডাক শুনে লুব্ধ হয়ে এসে জালে পড়ে। কি অদ্ভুত ট্র্যাজেডি! অন্ধ করবার সময় কত পাখী যে মারা পড়ে ! একশো পাখীর মধ্যে একটা এ অবস্থায় বঁচে-এজন্যে অন্ধ পক্ষিণীর দাম বাজারে খুব বেশী। ডাঃ মুন্থি এই সব বর্বর প্রথা উঠিয়ে দেবার জন্ধে গত ত্ৰিশ বছর থেকে চেষ্টা করছেন। নেপূলস্ এর শাসনকৰ্ত্তার কাছে আবেদন করেন প্রথমে, তা অগ্ৰাহ হয়। পরে তিনি রোমে গবৰ্ণমেণ্টের কাছে আবেদন করেন। গবৰ্ণমেণ্ট তাকে জানান যে কেপ্ৰিন্দ্বীপের ওই পাহাড়গুলি একজন লোকের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। সে সেখানে যা খুনী করতে পারে, গবৰ্ণমেণ্ট ५eड श्रडgoों कgवन नां । ডাঃ মুস্থি কত চেষ্টা করলেন, কিছুতেই কৃতকাৰ্য্য হোতে পারলেন না। কতগুলো কুকুর কিনে আনলেন, তারা সারা রাত ধরে চীৎকার করলে পাখী আর বারবারোসা দ্বীপের পাহাড়ে বসবে না-এই আশায় পাহাড়ের তলায় তাদের নিয়ে গিয়ে বাধলেন-যাদের পাহাড় তারা পুলিসে খবর দিলে, ডাক্তারের জরিমানা হোল। অবশেষে ভগবান দিন দিলেন। পাহাড়ের মালিক ছিল একজন কসাই।--তার শক্ত অসুখ হোল । স্থানীয় অন্য সব ডাক্তার কিছুই করতে পারলে না, অবশেষে ডাঃ মুস্থির ডাক পড়ল। ডাঃ মুন্থি এই সৰ্ত্তে তাকে আরোগ্য করতে রাজি হোলেন যে, সেরে উঠলে সে বারবারোসা পাহাড় তার কাছে বিক্রি করবে। সে সেরেও উঠল, পাহাড় ডাঃ মুন্থি কিনে নিলেন। সেই থেকে এই নিষ্ঠুর পক্ষীহনন ব্যাপার কেপ্ৰিন্দ্বীপ থেকে উঠে গেল। সে আজ. ২৯ বছর আগেকার কথা । তারপর ১৯২৩ সালে পাখীকে অন্ধ করবার নিষ্ঠুর প্রথা ইটালিয়ান গবৰ্ণমেণ্ট আইন দ্বারা রদ করেছেন।