পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-br8 ਵਿܓ হাটের দিনে রঙীন পোষাক পরা নরনারীর ভিড়ে সহরের রাস্ত ভৰ্ত্তি হয়ে যায়। রাস্তার ধারে ভাত ও রুটির দোকান, লোকে রাধা ভাত-তরকারী কিনে সেখানে বসেই তৃপ্তির সঙ্গে ভোজনে ব্যাপৃত। মাঝে মাঝে সরাইখানা । ধানের বোঝা পিঠে নিয়ে গাধার দল সার বেঁধে পথে চলেছে । শরৎকালে মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাওয়া অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ব্যাপার, নীল শূন্যে একটা বাজ পাখী উড়ছে, কি বালুকারাশির মধ্যে কোন মরু-উদ্ভিদের সোনালী ফুল ফুটে আছে, যেন এক একটি জীবন্ত কবিতার মত মনে হয়। একটি ছোট সহরে একজন তুকী মা তার পীড়িত কন্যাকে নিয়ে এল আমাদের কাছে। ডাক্তার জর্ডান দেখে বললেন, খুব শক্ত একটা অস্ত্ৰোপচার আবশ্যক। করাও হল, বোধ হয় মেয়েটি এ যাত্রা বেঁচে যাবে, কিন্তু সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হবার পূর্বেই আমাদের স্থান পরিত্যাগ করে অগ্রসর হতে হল। যখন আমরা রওনা হই, মায়ের চোখে সে কি কৃতজ্ঞতাপূর্ণ দৃষ্টি ! পথে অনেক গুচ্ছ পড়ে। তার অনেকগুলিতেই কিজিল শিল্পের নিদর্শন স্বরূপ অনেক প্রাচীরে অঙ্কিত চিত্র আছে। এগুলির ফটােগ্রাফ নেওয়ার অনুমতি আমরা পাই নি। ফটো নেওয়া তো দূরের কথা, কোন প্রকার প্ৰতিলিপি গ্ৰহণ করা বা নোট বইয়ে কিছু লিখে নেওয়া পৰ্যন্ত নিষিদ্ধ। শরৎকালের শেষে আমরা কুচা সহরে পৌছুলাম । কুচা অতি প্ৰাচীন সহর, হিউয়েনশ্যাং-এর বিবরণে এই সহরের উল্লেখ আছে । এখানকার শাসনকৰ্ত্ত তীর বাড়ীতে আমাদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন । চমৎকার বাগান, ফুলের গাছই বেশী। রেশমী সামিয়ানা ও চীনা-লণ্ঠনের তলায় বসে আমরা সবুজ চা ও মেওয়া ফল খেলাম । চীনা वांछक दिन बांसगां व्iछ व्ल । চা পান শেষ হবার পরে সেই টেবিলেই মাখনে ভাজা আস্ত ভেড়া আনা হল। যথেষ্ট পানভোজন ও আলাপআলোচনার পর আমাদের অধ্যক্ষ মাসিয়ে হার্ড শাসনকৰ্ত্তাকে একটি সোনার ঘড়ি উপহার দিলেন। মুরািটক জননী ও তার সন্তান। এই দোলাতে সন্তানকে বয়ে নিয়ে গিয়ে কোন নিরাপদ স্থানে রেখে মা তার দৈনন্দিন কৰ্ম্মে প্ৰবৃত্ত হয় । কারা সহাঁর চীন সাম্রাজ্যের অন্তর্গত। এখানে আমরা মাসখানেকের মধ্যে উপস্থিত হই । ফিরিওয়ালার দল বঁশের বঁাকে জিনিষপত্ৰ বুলিয়ে বিক্রি করছে। মোঙ্গল মেয়েরা জরির কাজ করা পোষাক পরে পথে বেড়াতে বেরিয়েছে। তাদের সঙ্গে ছোট ছোট ছেলেমেয়ের দল, আমাদের মোটর-দেখে তারা আনন্দের সঙ্গে ছুটে এল । কারা সহরে আমরা চীনা শাসনকৰ্ত্তার গৃহে অতিথি হই । তিনি অতি ভদ্রলোক, আমাদের আরও কয়েক দিন থাকতে বার বার অনুরোধ করলেন । কিন্তু সময় অত্যন্ত কম থাকায় আমরা সে অনুরোধ রক্ষা করতে পারলাম না । কিছুদূরে তকুসান “গর্জ’। এই বিশাল গর্জের মধ্য দিয়ে মোটর নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এখানে আমরা আর একদল ভ্রমণকারী ও তাদের অধ্যক্ষ লেফটেনাণ্ট পয়েন্টের সাক্ষাৎ পেলাম। এরা পিকিং থেকে ফিরে পামীরের পথে বৈরুথ যাচ্ছেন। এদের মুখে গোবি মরুভূমিতে এদের ভ্রমণের কথা শুনলাম “২৪শে মে গোবি মরুভূমির বালিরাশির মধ্যে আমরা গিয়ে পড়ি। প্ৰথমে আমাদের মনে আশঙ্কা হল। সঙ্গের মোটরগুলি অত্যন্ত বোঝাই ছিল। মরুভূমি অতিক্রম করতে গেলে ১২৫° মাইল চলাবার উপযুক্ত তেল সঙ্গে থাকা দরকার তো ?