পাতা:বিচিন্তা - রাজশেখর বসু.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৯
জাতিচরিত্র

 বিদ্যালয়ে ধর্মশিক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত―এ কথা মাঝে মাঝে শোনা যায়। যে ধর্ম সমাজ ও রাষ্ট্রের হিতকর এবং জাতিচরিত্রের উন্নতিসাধক, সেই সর্বসম্মত সর্বাঙ্গীণ ধর্মই আমাদের লোকায়ত (secular) রাষ্ট্রের বিদ্যালয়ে শেখানো যেতে পারে। শিক্ষকরাই এই ভার নেবেন, ছাত্রের বাল্যকাল থেকেই তাকে বিদ্যার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক আর রাষ্ট্রিক কর্তব্য শেখাবেন। এখন যারা অল্পবয়স্ক, ভবিষ্যতে তারাই রাষ্ট্র চালাবে, তাদের শিক্ষা আর চরিত্রগঠনের ব্যবস্থায় বিলম্ব করা চলবে না। যখন শ্রমিকের দল ধর্মঘট করে তখন উপস্থিত সংকট থেকে উদ্ধার পাবার জন্য সরকার বা কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে রফা করেন, অনিচ্ছায় বহু অর্থ ব্যয় করেন। এই অর্থের হয়তো আরও সংপ্রয়োগ হতে পারত। কিন্তু শিক্ষকদের কর্মের ফল সদ্য দেখা যায় না, সে কারণে সরকার বোঝেন না যে রাষ্ট্রের অন্যান্য বহু শাখাকে বঞ্চিত করেও শিক্ষককে তুষ্ট রাখতে হবে, যাতে তাঁর অভাব না থাকে এবং শিক্ষার কার্যে তিনি পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করতে পারেন।

 ১৩৬০