পাতা:বিজ্ঞান দর্পণ (প্রথম খণ্ড, ১২৮৯).pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৬
বিজ্ঞান-দর্পণ।
[আশ্বিন ১২৮৯।

 আমি। এরূপ কলের ফটক কই আর কোথাও দেখি নাই। ইহাতে তোমার ভারি সুবিধা হইয়াছে। হার্বি। সুবিধা নয়! আমাকে দরওয়ান রাখিতে হয় না।

 গাড়ি বারাণ্ডার নিচে গাড়ি আসিল। দেখি, একজন সহিস দাঁড়াইয়া আছে; একজন চাকর ভিতরের দরজা খুলিতেছে। আামি কিছু না বলিবার পূর্ব্বেই হার্বি বলিল “দেখ, আমি কাহাকেও ডাকি নাই, তথাপি আমরা আসিয়াছি ইহারা জানিতে পারিয়াছে। ফটক খুলিবার লোহার পাত দেখিয়াছ, সেই পাতের সঙ্গে দুইটি ইলেক্‌ট্রিক্ তার আছে। আস্তাবলের ও চাকরদের ঘরের ঘণ্টার সহিত ঐ তারের যোগ আছে। লোহার পাতটি নামিয়া যাওয়াতে ঐ তারের দ্বারা দুইটি ঘণ্টা বাজিয়াছে। ঘণ্টার শব্দে ইহারা জানিতে পারিল যে, কেহ বাড়িতে আাসিতেছে।”

 আমি। এটাও বড় মন্দ নয়। কোন ভদ্রলোককে আসিয়া অপেক্ষা করিয়া থাকিতে হয় না।

 বাটীর ভিতর প্রবেশ করিলাম। হার্বির ভগিনী পাশের ঘরে বসিয়াছিলেন, আমাদের দেখিতে পাইয়া নিকটে আসিলেন, হার্বি পরস্পরের পরিচয় দিয়া দিল। মিস হার্বিকে দেখিয়া, হার্বির ভগিনী বলিয়া বোধ হয় না। তাঁহার বয়স অনুমান ৫০ বৎসর। তাঁহাতে স্ত্রী জাতির মাধুর্য্য কিছুমাত্র নাই। তাঁহাকে দেখিলেই ইষ্টলিনের বর্ণীলিয়াকে মনে পড়ে। তিনি যথাসাধ্য মিষ্ট স্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, কেমন মহাশয় আসিতে কোন কষ্ট হয় নাইত?” এইরূপ আরও দুই একটি কথার পর তাহার কোন গৃহ কার্য্য মনে পড়াতে চলিয়া গেলেন।

 উঠিবার শিঁড়ীর বাম দিকে দেখিলাম, একটা মোটা লোহার শিকের গায়ে কতকগুলি বাঁকান লোহার কাটি আছে; এক একটি কাটিতে এক একখানি ব্রুস লাগান আছে। কলটি দেখিয়া কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না, জিজ্ঞাসা করিলাম “হার্বি, ওটা কি হে।”

 হার্বি। কোন্‌টা! ওঃ। ওটি আমার ব্রুসের কল। দাঁড়াও তোমাকে বুঝাইয়া দিই। এই যে জমি হইতে এক ফুট উঁচুতে এক খানি চৌকি দেখিতেছ উহার উপর দাঁড়াইতে হয়, উহার উপর উঠিলেই তোমার ভরে আস্তে আস্তে চৌকি খানি নামিতে থাকে; আর নামিরার সময় তাহার মধ্যস্থিত কতকগুলি ঘড়ীর কলের মতন চাকাকে চালাইয়া দেয়, আর এই সকল বাঁকান ব্রুস লাগান শিক গুলি ঘুরিয়া ঘুরিয়া তোমার কোট পেণ্টুলেন ও জুতা ব্রুস করিতে থাকে। কিন্তু সকল অপেক্ষা উপরের হ্যাট ব্রুসটিই মজার। এটি দেখিতে ঠিক যেন একটি হ্যাট বাক্স দুই ভাগ করা। এখন ইহাদের মধ্যে বিলক্ষণ—

 আমি। চমৎকার! চমৎকার! একবার ওঠ না। দেখি কেমন চলে।