পাতা:বিদায়-আরতি.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সিঞ্চলে সূর্য্যোদয়

দুধে ধুয়ে আঁধার-গ্লানি দৃষ্টি যে চাঁদ দিল নিশার চোখে,—
মিলিয়ে দিল পুষ্প-কলির প্রাণ-কুহরের কুহক জ্যোস্নালোকে,—
উপল বহু উচল পথে স্নিগ্ধ-উজল জ্বালিয়ে রতন-বাতি
যাত্রীদলের সাথে সাথে মৌন পায়ে চলছিল যে সাথী,—
পথের শেষে থম্‌কে হঠাৎ চম্‌কে দেখি মাঝ-গগনের কাছে
রাত্রি-দিবার সন্ধি-রেখার অবাক্‌-চোখে সে চাঁদ চেয়ে আছে—
চেয়ে আছে তুষার-রুচি শ্বেত-ময়ূরের পারা,—
হিমে-হানা, কুষ্ঠিত-কায়, শীর্ণ-শিথিল পাখনা, পেখম-হারা।

মিলিয়ে গেছে মুখর জগৎ,—তলিয়ে গেছে অতল মৌনতাতে,
পেয়েছে লোপ দৃষ্টি-বাধা,—সকল বাধা সকল সীমার সাথে,
সীমার সমাধ আকাশ অগাধ ডিম্ব হেন বিশ্ব-ভুবন ঘিরে
সুপ্তি ঘেরা জন্ম-কোষে ভ্রাণ-গরুড় পোষে হিমাদ্রিরে!
হারিয়ে গেছে হাওয়ার চলা, নিশাস ফ্যাল ফুরিয়ে সেছে যেন,
সঞ্চরে প্রাণ-বায়ু-বিতান গর্ভ-শয়ান শিশুর নিশাস হেন,
বিস্ময়েরি নূতন বিশ্ব স্বপ্নে মৃদু হাসে।
সকল আঁখি পূর্ব্বমুখী অপূর্ব্বেরি অভ্যুদয়ের আশে।

উষার আভাস জাগল কি রে?—দিনমণির খুল্‌ল মণি-কোঠা?
শুকতারাটির শিউলি-ফুলে লাগল ফিরে অরুণ-রঙের বোটা?
পূব-তোরণে চিড়্‌ খেল কি দিগ্‌বরণের নিবিড় দন্তাঘাতে?
ধূৎরো-ফুলের ডালি মাথায় তুষার-গিরি জাগ্‌ছে প্রতীক্ষাতে!

২৫