পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারােগার দপ্তর, ২০৩ সংখ্যা।

তত্রত্য কার্য্য সমাপন করিতে বেলা দুইটা বাজিয়া গেল। যখন পুনরায় থানায় প্রত্যাগমন করিলাম, তখন বেলা প্রায় তিনটা।

 একে গ্রীষ্মকাল, তাহার উপর প্রচণ্ড রৌদ্র, কাহার সাধ্য ঘরের বাহির হয়। নিতান্ত প্রয়োজন না হইলে আর কেহ সেই রৌদ্রে যাতায়াত করে না। আদালত হইতে প্রত্যাগমন করিয়া আমি অত্যন্ত ক্লান্ত হইয়া পড়িলাম এবং একটী নিভৃত স্থানে গিয়া বিশ্রাম করিতে লাগিলাম।

 কিছুক্ষণ পরে ভাবিলাম, কেমন করিয়া সুশীলের উপকার করি। আংটীটা চুরি যাওয়ায় সুশীলের মাতার মন এত খারাপ হইয়া গিয়াছে যে, আংটী না পাইলে হয়ত তিনি উন্মাদ হইয়া পড়িবেন। তাঁহার অর্থের অভাব নাই, অর্থের জন্য তাঁহার বিশেষ কষ্ট হইবে না কিন্তু তাঁহার বাড়ীতে, তাঁহারই আত্মীয়ের দ্বারা অংটীটা চুরি হইয়াছে জানিয়া তিনি মর্মান্তিক দুঃখিত হইয়াছেন।

 এইরূপ চিন্তার পর আমি ভাবিলাম, করিমবক্সের সন্ধান জানিতে পারিলে সুশীলের মাতার বেয়ান ও বেহাইএর সংবাদ জানা যাইতে পারে। কিন্তু করিমবক্সের সন্ধান পাই কোথায়? কেমন করিয়া তাহাকে বাহির করি। ভাবিলাম, মিউনিসিপাল আপিসে গাড়ীর নম্বর ও অধিকারীর নাম লেখা থাকে। হয়ত সেখানে যাইলে করিমবক্সের ঠিকানা পাওয়া যাইতে পারে। কিন্তু করিমবক্স সাধারণ নাম, হয়ত অনেক করিমবক্স ভাড়াটিয়া গাড়ীর অধিকারী। আমি কোন্ করিমবক্সের নিকট যাইব?

 কিছুক্ষণ এই প্রকার চিন্তা করিয়া অগ্রে মিউনিসিপাল আপিসে যাওয়াই যুক্তিসিদ্ধ বিবেচনা করিলাম এবং তখনই একজন কনষ্টেবলকে একখানি গাড়ী আনিতে বলিলাম।