পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদায় ভোজ।
২১

করিতেছি। তুমি যে পুরা ভাড়া আদায় করিতে পারিয়াছ, তাহাই যথেষ্ট।”

 আমার কথায় করিমের সাহস বৃদ্ধি হইল। সে হাসিয়া বলিল, “হুজুর! আপনি যথার্থই বলিয়াছেন। আধুলীটা বাহির করিতে আধ ঘণ্টা লাগিয়াছিল, তাঁহারা যে বড় ভাল লোক নয় তাহা বেশ বুঝিতে পারিয়াছি।”

 আমি দেখিলাম, কোচমানের বেশ সাহস হইয়াছে। মিষ্টকথায় এখন তাহার মনের কথা বাহির করিয়া লইতে পারা যায়। এই ভাবিয়া অতি মৃদুস্বরে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তোমরা কখন ষ্টেসনে উপস্থিত হইয়াছিলে?”

 ক। আজ্ঞে তখন বেলা প্রায় সাড়ে আটটা।

 আ। তাঁহারা কোন্ ট্রেনে গিয়াছে জান?

 করিমবক্স ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “কোন ট্রেনেই নয় বলিয়া বোধ হয়।”

 আমি বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “সে কি?”

 ক। তাঁহাদের কথাবার্ত্তা শুনিয়া ঐরূপই বোধ হইয়াছিল।

 আ। কি কথা? কখন শুনিলে?

 করিম ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “হাওড়া স্টেশনে যাইবার সময় হ্যারিসন রোডের মোড়ে আমার একটী ঘোড়ার জোত খুলিয়া যায়। আমি তখনই গাড়ী থামাইয়া অবতরণ করি এবং জোত বাঁধিয়া দিই। যখন গাড়ী হইতে নামিতেছিলাম, সেই সময় কর্ত্তা বলিতেছিলেন, ষ্টেশন পর্য্যন্ত না যাইলে কোচমান সন্দেহ করিতে পারে।”

 কথাটা শুনিয়া আমার সন্দেহ হইল, ভাবিলাম, যাঁহারা তীর্থে