পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৭৯
ছিল, সেই ভাষা ও সাহিত্য ভারতবর্ষের এই অংশ হইতে একেবারে বিলুপ্ত হইয়া যাইবে।” (১৭ই এপ্রিল, ১৮৫৯)

 বাংলা-সরকার ডিরেক্টরের সঙ্গে একমত হইয়া তাঁহার প্রস্তাবটি বড়লাটের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাইলেন (২৫ এপ্রিল)। বড়লাটও একটি বিষয় ছাড়া সকলই মঞ্জুর করিলেন। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতি-অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়াতে, পাঠ্যতালিকা হইতে ইহা বাদ দিবার প্রস্তাব ছোটলাটকে পুনর্বিবেচনা করিতে বলা, হইল।[১]

 ছোটলাট ক্যাম্পবেলের সময়ে সংস্কৃত কলেজের নূতন ব্যবস্থা হইল। তাঁহার নীতিই ছিল সকল বিষয়ে ব্যসঙ্কোচ করা। ১৮৭১, ৩০ মে বাংলা-সরকার ডিরেক্টরের উপর আদেশ জারি করিলেন, যেন সুযোগ পাইলেই কলেজের নির্দিষ্ট ব্যয় সংক্ষেপ করা হয়। স্মৃতির অধ্যাপক ভরতচন্দ্র শিরোমণি, অবসরগ্রহণ করিতেই ডিরেক্টর প্রস্তাব করিলেন ঐ পদটি উঠাইয়া দেওয়া হোক (১০ই ফেব্রুয়ারি, ১৮৭২)। সংস্কৃত কলেজের উচ্চতম ইংরেজী-বিভাগও উঠাইয়া দিবার আদেশ হইল। ঠিক হইল, প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া সংস্কৃত কলেজের ছাত্রেরা প্রেসিডেন্সি কলেজে সংস্কৃত ছাড়া সব বিষয়ই পড়িবে।

 কিন্তু স্মৃতির অধ্যাপনা উঠাইয়া দিবার প্রস্তাব শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশেষ অসন্তোষের সৃষ্টি করিল। সনাতন ধর্ম্মরক্ষিণী সভা এবং ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান এসোসিয়েশন এই আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে আবেদন করিলেন। ছোটলাট আবার বিদ্যাসাগরের পরামর্শ চাহিলেন। তিনি লিখিলেন, যে-সকল দেশীয় ভদ্রলোক সংস্কৃত-শিক্ষায়


  1. Home Dept. Education Cons. 20 May 1859, Nos. 16-18.