পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ
অনুরোধ করিলেন। কৃষ্ণদাস তখন বালক। সুতরাং বিদ্যাসাগর মহাশয় কৃষ্ণদাসের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস না করিয়া নিজের ইচ্ছানুরূপ প্রবন্ধাদি তাহাকে দিয়া লিখাইয়া লইয়া, হিন্দু পেট্রিয়ট চালাইতে লাগিলেন।... কৃষ্ণদাস এইরূপে কিয়দ্দিনের জন্য বিদ্যাসাগরের অধীনে থাকিয়া হিন্দু পেট্রিয়টের সম্পাদকের কার্য্য করেন। একথা বিদ্যাসাগর মহাশয় আমাদিগকে অনেক কষ্ট দিয়া শেষে বলিয়া দিয়াছিলেন।কৃষ্ণদাস বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনুগ্রহে হিন্দু পেট্রিয়টের সম্পাদকতা প্রাপ্ত হন। বিদ্যাসাগরের এই অনুগ্রহ না হইলে হয়ত কৃষ্ণদাসকে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান সভায় চাকরি করিয়া জীবন শেষ করিতে হইত।”[১]

দেখা যাইতেছে বিদ্যাসাগরের লোক চিনিতে ভুল হয় নাই। ‘সোমপ্রকাশ’ বিদ্যাসাগর মহাশয়ই প্রথম বাহির করেন (১৮৫৮, নভেম্বর)।[২]তখনকার দিনে এরূপ উচ্চাঙ্গের সংবাদপত্র ছিল না।


  1. “কৃষ্ণদাস পালের জীবনী”—শ্রীরামগোপাল সান্ন্যাল। (১৮৯০) পৃ. ২৭-৩০। সান্ন্যাল মহাশয় লিখিয়াছেন,—“কৃষ্ণদাস বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অধীনে থাকিয়া হিন্দু পেট্রিয়ট চালাইতে বোধ হয় ইচ্ছুক ছিলেন না। তাই তিনি তলায় তলায় ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান সভার সভাদিগকে উক্ত কাগজের স্বত্বাধিকারী হইবার জন্য উত্তেজিত করিতে লাগিলেন। কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাশয়ের নিকট প্রস্তাব হইতে লাগিল যে, হিন্দু পেট্রিয়ট বিদ্যাসাগরের অধীনে না রাখিয়া উহা কতিপয় ট্রাষ্টির হস্তে সমর্পিত হউক। কিন্তু ঐ প্রস্তাব বিদ্যাসাগরের নিকট কে করিবে এই বিষম সমস্যা প্রস্তাবকারীদিগের মনে উদিত হইল। এই কথা চালাচালি হইতে হইতে বিদ্যাসাগর সময় পরিশেষে জানিতে পারিলেন যে, কালীপ্রসন্ন বাবুর নিকট এই প্রস্তাব হইতেছে। তেজস্বী ব্রাহ্মণশ্রেষ্ঠ বিদ্যাসাগর এইরূপ লুকাচুরির মধ্যে থাকিবার লোক নহেন। তিনি অবিলম্বে হিন্দু পেট্রিয়টের কর্ত্তৃত্ব পরিত্যাগ করিলেন।” (পৃ.৩০-৩১)
  2. চাংড়িপোতা দ্বারিকানাথ বিদ্যাভূষণ লাইব্রেরীতে ৪র্থ ভাগ হইতে কয়েক বৎসরের ‘সোমপ্রকাশের’ ফাইল আছে।