পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোধোদয়—বস্তুর আকার ও পরিমাণ ›ፃ(: মধ্যে, হরিত, পাটল, ধূমল, এই তিনটি প্রধান। নীল ও পীত, এই দুই মূল বর্ণ মিশ্রিত করিলে, হরিত বর্ণ উৎপন্ন হয়। পীত ও লোহিত, এই দুই মূল বর্ণ মিশ্রিত করিলে, পাটল বর্ণ হয়। নীল ও লোহিত, এই দুই মূল বর্ণ মিশ্রিত করিলে, ধূমল বর্ণ হয়। তদ্ভিন্ন, কপিশ, ধূসর, পিঙ্গল ইত্যাদি নানা মিশ্র বর্ণ আছে। সে সকলও তিন মূল বর্ণের মিশ্রণে উৎপন্ন হয়। শুক্ল ও কৃষ্ণ, সচরাচর, বর্ণ বলিয়া পরিগণিত হইয়া থাকে। কিন্তু শুক্ল ও কৃষ্ণ বর্ণ নহে। অমুক বস্তু শুক্ল, অমুক বস্তু কৃষ্ণ, ইহা বলিলে, সেই সেই বস্তুতে সৰ্ব্ব বর্ণের অসদ্ভাব, অর্থাৎ কোনও বর্ণ নাই, ইহাই প্রতীয়মান হইবেক । কার্পাস সূত্রে নিৰ্ম্মিত ধৌত বস্ত্র শুক্লের উত্তম উদাহরণস্থল ; রাত্রিকালীন প্রগাঢ় অন্ধকার কৃষ্ণের উত্তম দৃষ্টান্ত । রামধনু ও ময়ুরপুচ্ছে এক কালে নানা বর্ণ দেখিতে পাওয়া যায়। কখনও কখনও, গগনমণ্ডলে, ধমুকের মত, নানা বর্ণের অতি সুন্দর যে বস্তু দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাকে লোকে রামধনু বলে। বৃষ্টিকালীন জলবিন্দুসমূহে সূর্য্যেব কিরণ পড়িয়া, ঐরূপ নান৷ বর্ণের পরম সুন্দর ধমুকের আকার উৎপন্ন হয়। রামধনুতে, তিন মূল বর্ণ ও চারি মিশ্র বর্ণ, সমুদয়ে সাত বর্ণ থাকে। ধনুকের উপরি ভাগ হইতে আরম্ভ করিয়া, যথাক্রমে লোহিত, পাটল, পীত, হরিত, নীল, ধূমল, বায়লেট, এই সকল বর্ণ শোভা পায়। সুৰ্য্যের বিপরীত দিকে রামধনুর উদয় হইয়া থাকে । • বস্তুর আকার ও পরিমাণ সকল বস্তুরই আকার ভিন্ন ভিন্ন । কোনও কোনও বস্তু বড়, কোনও কোনও বস্তু ছোট। ঘটা অপেক্ষা কলসী বড় ; বিড়াল অপেক্ষ গরু বড় ; শিশু অপেক্ষ যুব বড়। সকল বস্তুরই আকারে দৈর্ঘ্য, বিস্তার, বেধ, এই তিন গুণ আছে। বস্তুর লম্বা দিকের পরিমাণকে দৈর্ঘ্য, দুই পাশ্বের পরিমাণকে বিস্তার, দুই পৃষ্ঠের পরিমাণকে বেধ, বলে। পুস্তকের উপরি ভাগ হইতে নিম্ন ভাগ পৰ্য্যন্ত যে পরিমাণ, তাহার নাম দৈর্ঘ্য ; এক পাশ্ব হইতে অপর পাশ্ব পর্য্যন্ত যে পরিমাণ, তাহার নাম বিস্তার ; এক পৃষ্ঠ হইতে অপর পৃষ্ঠ পৰ্য্যন্ত যে পরিমাণ, তাহার নাম বেধ ।