দুই ঘণ্টা কাল, গোলাবৃষ্টি করিয়া, ১৭৫৭ খৃঃ অব্দের ২রা জানুয়ারি, ঐ স্থান অধিকার করিলেন। এই রূপে, ইঙ্গরেজেরা পুনর্ব্বার কলিকাতার অধিকার প্রাপ্ত হইলেন, অথচ স্বপক্ষীয় এক ব্যক্তিরও প্রাণহানি হইল না।
ক্লাইব বিলক্ষণ বুঝিতে পারিয়াছিলেন, ভয় প্রদর্শন না করিলে, নবাব কদাচি সন্ধি করিতে চাহিবেন না। অতএব তিনি, কলিকাতা উদ্ধারের দুই দিবস পরে, যুদ্ধজাহাজ ও সৈন্য পাঠাইয়া, হুগলী অধিকার করিলেন। তৎকালে এই নগর প্রধান বাণিজ্যস্থান ছিল।
বোধ হইতেছে, কলিকাতা অধিকার হইবার অব্যবহিত পরে, ক্লাইব মুরশিদাবাদের শেঠদিগের নিকট এই প্রার্থনা করিয়া পাঠাইয়াছিলেন যে, তাঁহারা, মধ্যস্থ হইয়া, নবাবের সহিত ইঙ্গরেজদিগের সন্ধি করিয়া দেন। তদনুসারে তাঁহারা সন্ধির প্রস্তাব করেন। সিরাজ উদ্দৌলাও, প্রথমতঃ, প্রসন্ন চিত্তে, তাঁহাদের পরামর্শ শুনিয়াছিলেন; কিন্তু ক্লাইব, হুগলী অধিকার করিয়া, তথাকার বন্দর লুঠ করিয়াছেন, ইহা শুনিবা মাত্র, ক্রোধে অন্ধ হইয়া, সসৈন্যে অবিলম্বে কলিকাতা যাত্রা করিলেন। তিনি, ৩০এ জানুয়ারি, হুগলীর ঘাটে গঙ্গা পার হইলেন; এবং, ২রা ফেব্রুয়ারি, কলিকাতার সন্নিকটে উপস্থিত হইয়া, ক্লাইবের ছাউনির এক পোয়া অন্তরে শিবির নিবেশিত করিলেন।
ক্লাইব, ৭০০ গোরা ও ১২০০ সিপাই, এই মাত্র সৈন্য সংগ্রহ করিয়াছিলেন। কিন্তু নবাবের সৈন্য প্রায় চত্বারিংশৎ সহস্র।
সিরাজ উদ্দৌলা পঁহুছিবা মাত্র, ক্লাইব, সন্ধিপ্রার্থনায়, তাঁহার নিকট দূত প্রেরণ করিলেন। নবাবের সহিত দূতাদিগের অনেক বার সাক্ষাৎ ও কথোপকথন হইল। তাহাতে তাঁহারা স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন, নবাব যদিও মুখে সন্ধির কথা কহিতেছেন, তাহার অন্তঃকরণ সেরূপ নহে। বিশেষতঃ, তাঁহাকে উপস্থিত দেখিয়া, কলিকাতার চারি দিকের লোক ভয়ে পলায়ন করাতে, ইঙ্গরেজদিগের আহারসামগ্রী দুগ্ধপ্রাপ্য হইতে লাগিল। অতএব ক্লাইব, এক উদ্যমেই, নবাবকে আক্রমণ করা আবশ্যক বিবেচনা করিলেন। তিনি, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি রাত্রিতে, ওয়াটসন সাহেবের জাহাজে গিয়া, তাঁহার নিকট ছয় শত জাহাজী গোরা চাহিয়া লইলেন, এবং তাহাদিগকে সঙ্গে করিয়া, রাত্রি