পদে নিযুক্ত হইলেন। সিনিয়ার ও জুনিয়ার ডিপার্টমেণ্টে এস্কলাশিপ্ পরীক্ষায়, সংস্কৃতের ও অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষায় ছাত্রগণকে যেরূপ নম্বর রাখিতে হইত, সেইরূপ একদিন ইংরাজীর নম্বর রাখিতে হইবে, নচেৎ এস্কলাশিপ্ পাইবে না। এই নিয়ম করায়, অগত্যা সকলকেই রীতিমত ইংরাজী শিখিতে হইয়াছিল। ক্রমশঃ সংস্কৃত-কলেজের ছাত্রগণ ইংরাজী-বিদ্যালয়ের ন্যায় ইংরাজী শিখিতে প্রবৃত্ত হইল। পরবৎসর হইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রথা নূতন সৃষ্টি হইয়াছিল। সংস্কৃত-কলেজের ছাত্রগণের মধ্যে অনেকেই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায়, অন্যান্য ইংরাজী-বিদ্যালয়ের ছাত্র গণের মত কৃতকার্য্য় হইয়াছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ই সংস্কৃত-কলেজে ইংরাজী শিক্ষা দিবার আদি-কারণ। তাঁহারই আন্তরিক যত্ন ও আগ্রহাভিশয়েই সংস্কৃতকলেজের উন্নতি হইয়াছে, ইহা সকলকেই মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিতে হইবে। উত্তরকালে যিনিই অধ্যক্ষ হউন না কেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নাম কোনকালেই বিলুপ্ত হইবার আশঙ্কা নাই।
ভারতবর্ষের মধ্যে সর্ব্বপ্রধান কবি কালিদাসের প্রণীত শকুন্তলা, সংস্কৃতভাষায় সর্ষোৎকৃষ্ট নাটক। অগ্রজ মহাশয়, ঐ পুস্তক বঙ্গভাষায় অনুবাদ করিয়া ১২৬১ সালে ২৫শে অগ্রহায়ণ মুদ্রিত ও প্রচারিত করিলেন। পাঠকবর্গ বিদ্যাসাগরের অনুবাদিত শকুন্তলা পাঠ করিয়া যে পরম সন্তোষ লাভ করিয়াছিলেন, ইহা এস্থলে উল্লেখ করা বাহুল্য। দেশবিদেশস্থ কি বিদ্যার্থী, কি পণ্ডিতমণ্ডলী, কি বিষয়ীলোক সকলেই অতিশয় আগ্রহের সহিত ইহা পাঠ করিতেন।
রাজা রামমোহন রায়ের পুত্র রমাপ্রসাদ রায়ের সহিত অগ্রঞ্জ মহাশয়ের অত্যন্ত প্রণয়-ছিল। রমাপ্রসাদ বাবু, বর্দ্ধমানের রাজবাটী হইতে নৈহাটিনিবাসী নন্দকুমার ন্যায়চঞ্চু নামক স্বল্পবয়স্ক, অসাধারণ ধীশক্তিসম্পন্ন, ন্যায়-শাস্ত্রে অদ্বিতীয় এক পণ্ডিতকে আনয়ন করিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অর্পণ করেন। ঐ নন্দকুমারের পিতৃকুল ও মাতৃকুল, বুদ্ধিমত্তা ও বিদ্যাবর্তার কারণ বঙ্গদেশে