পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

হইয়াছিলেন যে, বৈঁছিগ্রামের মধ্যে উক্ত বাবুরা সাবেক বনিয়াদি তালুকদার এবং পরম দয়ালু। কালসহকারে ইহাঁদের সম্পত্তিসমুহ লোপ হইয়া যাওয়ায়, গোবিন্দচাঁদ বাবু ঢাকা জেলায় মুন্‌সেফী কর্ম্মে নিযুক্ত হইয়াছিলেন। দুর্ভাগ্যপ্রযুক্ত গোবিন্দচাঁদ বাবু কর্ম্মচ্যুত হইয়া, উপায়ান্তর-বিহীন হইয়াছেন শুনিয়া, অগ্রজ মহাশয় অত্যন্ত দুঃখিত হইলেন এবং কলিকাতায় প্রত্যাগত হইয়া, কয়েক দিবস পরে পাইকপাড়ানিবাসী রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ মহোদয়কে অনুরোধ করিয়া, বৃন্দাবনের লালাবাবুর ঠাকুরবাটীর ও তৎসন্নিহিত জমিদারির নায়েবের পদে মাসিক ১৫০৲ টাকা বেতনে নিযুক্ত করিয়া দিলেন। বৎসর পরে গোবিন্দচাঁদ বাবু ঐ পদ পরিত্যাগ করায়, উহাঁর ভ্রাতুস্পুত্রগণের কলেজের অধ্যয়ন বন্ধ হয়। অগ্রজ ইহা শ্রবণ করিয়া, উহাঁর ভ্রাতা বাবু গগাকুলচাঁদ বসুকে স্বীয় সংস্কৃত-প্রেস এবং উহার ডিপজিটারিতে মাসিক ৫০৲ টাকা বেতনে ম্যানেজার নিযুক্ত করেন। ঐ টাকায় তাঁহার ভ্রাতুষ্পুত্র দেবেন্দ্র ও উপেন্দ্র বসু প্রভৃতির কলিকাতায় বাসাখরচ নির্ব্বাহ হইত। এতদ্ভিন্ন গোকুলবাবু সাংসারিকব্যয়-নির্ব্বহের জন্য কয়েক মাসের মধ্যে অতিরিক্ত প্রায় দুই সহস্র টাকা না বলিয়া খরচ করেন; ইহাতে অগ্রজ মহাশয় কিছুমাত্র ক্ষুব্ধ বা অসন্তুষ্ট হন নাই।

 এই ঘটনার কয়েক মাস পরে, কলিকাতা বহুবাজারনিবাসী বাবু নীলকমল বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়, উক্ত গোকুলবাবু প্রভৃতির নামে অভিযোগ করিয়া, বৈঁছির বসতবাটী ক্রোক করিয়া নীলাম করিবেন স্থির করিলেন। গোকুলচাদ বাবু প্রভৃতি উক্ত সংবাদ অগ্রজ মহাশয়ের কর্ণগোচর করিলে, তিনি অকাতরে প্রায় সহস্র মুদ্রা ডিক্রীদার নীলকমল বাবুকে প্রদান করিয়া, উহাদের বাস্তবাটী প্রভৃতি মুক্ত করিয়া দিলেন।

 ঐ সময়ে একদিন সন্ধিপুরনিবাসী শ্যামাচরণ চট্টোপাধ্যায় আসিয়া ক্রন্দন করিয়া বলেন, জনাই গ্রামের মুখোপাধ্যায় মহাশয়েরা ডিক্রী করিয়া আমাদের বাটী নীলাম করিবেন। আপনি ৫০০৲ টাকা দিলে বাটী রক্ষা হয়; নচেৎ