পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৫৩

৩০০০ তিন সহস্ৰ ব্রাহ্মণ ফলাহার করেন, এবং পরদিবস অন্নেও প্রায় দুই সহস্ৰ ব্রাহ্মণ ভোজন করেন। ইহাতে পিতৃদেব পরম আহলাদিত হইয়াছিলেন।

 পরবৎসর সপিণ্ডনসময়েও দাদা, পিতৃদেবকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য যথেষ্ট টাকা দিয়াছিলেন। অধ্যাপকগণের নিমন্ত্রণার্থ প্রথমে যে কবিতাটা প্রস্তুত হয়, উহা দুর্ব্বোধ দেখিয়া, স্বয়ং এই সরল কবিতাটি লিখিয়া দেন।

পৌষস্য পঞ্চবিংশাহে রবৌ মাতুঃ সপিণ্ডনং।
কৃপয়া সাধ্যতাং ধীরৈর্বীরসিংহসমাগতৈঃ॥

 আমাদের বাটীর সন্নিহিত রাধানগরীনিবাসী জমিদার ৺বৈদ্যনাথ চৌধুরীর পৌত্র বাবু শিবনারায়ণ চৌধুরী, এ প্রদেশের মধ্যে সম্ভ্রান্ত ও মান্য-গণ্য জমিদার ছিলেন। বাবু রমাপ্রসাদ রায়ের নিকট ইনি জমিদারী বন্ধক রাখিয়া, পঞ্চাশ সহস্ৰ মুদ্র ঋণ গ্রহণ করেন। ইহার সুদও ২৫০০০৲ পঁচিশ হাজার টাকা হইয়াছিল। এই পঁচাত্তর হাজার টাকার কিস্তীবন্দী করিতে যাইয়া, বাবু শিবনারায়ণ চৌধুরী কলিকাতাস্থ উক্ত রায় মহাশয়ের দপ্তরখানায় পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হন। উহাঁর পুত্রদ্বয়, রমাপ্রসাদ বাবুর নিকট কাঁদিয়া পদানত হইলেও, উক্ত রায় মহাশয়ের অন্তঃকরণে দয়ার উদ্রেক হইল না। অনন্তর রাধানগরীনিবাসী মৃত শিবনারায়ণ চৌধুরীর পুত্রদ্বয় এবং মৃত সদানন্দ ও লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধুরীর বিধবা পত্নীদ্বয়, ইঁহারাও কলিকাতায় অগ্রজ মহাশয়ের নিকট যাইয়া রোদন করিতে লাগিলেন। উহাঁদের রোদনে অগ্রজ মহাশয়েরও চক্ষে জল আসিল। উহাঁরা রমাপ্রসাদ বাবুর ভয়ে তাঁহার বাটী পরিত্যাগ করিয়া, খিদিরপুর পদ্মপুকুরের ধর্ম্মদাস কেরাণীর ভবনে গুপ্তভাবে প্রায় চারি মাস কাল অবস্থিতি করেন। অগ্রজ, উহাঁদিগকে ঋণজাল হইতে মুক্ত করিবার চেষ্টা করেন।যাঁহার নিকট টাকার স্থির করিতেন, রমাপ্রসাদ বাবু তাঁহাকেই টাকা দিতে নিবারণ করিয়া দিতেন। তজ্জন্য কলিকাতার মধ্যে কোন মহাজন টাকা ধার দিতে অগ্রসর হয় নাই। অবশেষে রাজা প্রতাপসিংহের আত্মীয় বাবু কালিদাস ঘোষ মহাশয়ের নিকট পঞ্চাশ সহস্ৰ