পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

জনে যুক্তি করিয়া পুনর্ব্বার দরখাস্ত করায়, ঐরূপ অগ্রাহ হয়। ইহাতে দ্বারকনাথ মিত্র আইনপুস্তক ভালরূপ দেখিয়া ও অগ্রজের সহিত পরামর্শ করিয়া, ১৮৫৮ সালের ৪০ আইনের ১২ ধারা মতে দরখাস্ত লেখাইয়া, নাবালক গিরিশচন্দ্র বাহাদুর দ্বারা চব্বিশ পরগণার জজসাহেবের নিকট দরখাস্ত দাখিল করেন। জজ সাহেব, সাবালক ও নাবালকগণের প্রতি সানুকুল হইয়া, উক্ত আইন অনুসারে দরখাস্ত মঞ্জুর করিয়া, কালেক্টর সাহেবের নিকট পাঠান। পূর্ব্বের ন্যায় জজ সাহেবের হুকুম অগ্রাহ হয়। ইহা দেখিয়া অগ্রজ মহাশয়, পুনর্ব্বার দ্বারকানাথ মিত্র মহাশয়ের সহিত পরামর্শ করিয়া, দরখাস্ত দ্বারা জজ সাহেবকে অবগত করিলে, তিনি আদালত অবজ্ঞার কথা উল্লেখ করিয়া, কালেক্টার সাহেবকে লিখেন যে, আমি ডিষ্ট্রক্ট জজ; উক্ত পাইকপাড়া রাজষ্টেট্ কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে যাইবার হুকুম দিয়াছি। এ হুকুম অনুসারে কার্য্য না করিলে, আইন অনুসারে আদালত অবজ্ঞার দণ্ড পাইবে। এই সময় রাজ-ষ্টেটের কার্য্যের সুবন্দোবস্ত না থাকায় ও ষ্টেট ঋণজালে জড়িত থাকায়, কালেক্টারি খাজনা দাখিল হয় নাই এবং ত্বরায় দাখিল হইবার সম্ভাবনা ছিল না; সুতরাং ১৭৯৩ সালের লাটবন্দীর আইন অনুসারে সমস্ত জমিদারী বিক্রয় হইবার সম্ভাবনা দেখিয়া, অগ্রজ মহাশয় ভয় পাইয়া, দারাজিলিংস্থ বীডন সাহেবকে পত্র লেখেন। বীডন সাহেব, অনুগ্রহ প্রকাশ করিয়া জমীদারী রক্ষা করেন। তিনি দারাজিলিং হইতে লিখেন যে, তোমার অনুরোধে এ যাত্রা পাইকপাড়া রাজ-ষ্টেট রক্ষা করিলাম। এরূপ কাহারও হয় না; অতঃপর এরূপ যেন না হয়।

 কালেক্টর সাহেব, আদালত-অবজ্ঞার দণ্ডের ভয়ে, ত্বরায় কমিসনর ও বোর্ডকে অবগত করাইয়া ও সন্মতি লইয়া, পাইকপাড়ার রাজ-ষ্টেট্ কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে লইলেন ও সুবন্দোবস্ত করিলেন। কোর্ট অব্ ওয়ার্ডের সুবন্দোবস্ত অনুসারে, পাইকপাড়ার রাজ-ষ্টেট্ স্বল্পদিন-মধ্যে দুশ্ছেদ্য ঋণজাল ছিন্ন করিয়া মুক্তিলাভ করিল।