পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

বিষয়ে সম্পূর্ণ অসমর্থ ছিলেন। অগ্রজ, সকল বিষয়েই শিক্ষা দিতে দক্ষ ছিলেন। অনেকে রাজকৃষ্ণ বাবুকে দেখিবার জন্য অগ্রজের বাসায় সমাগত হইতেন। তৎকালের কলেজের শিক্ষকগণ দাদার অলৌকিক ক্ষমতাদর্শনে মুগ্ধ হইয়া- ছিলেন। সংস্কৃত-কলেজের নিয়ম ছিল যে, তিন বৎসর ব্যাকরণ অধ্যয়ন এবং তৎপরে দুই বৎসর সাহিত্য শিক্ষা করিতে হইত। অনন্তর এক বৎসর অলঙ্কার- শ্রেণীতে শিক্ষা লাভ করিয়া ব্যুৎপত্তি জন্মিলে, ছাত্রগণ দর্শন বা স্মৃতির শ্রেণীতে অধ্যয়ন করিত। পরে টেষ্ট একজামিনে উত্তীর্ণ হইলে পর, সিনিয়ার ডিপার্টমেণ্টে পরীক্ষা দিতে পাইত। এরূপ স্থলে, অগ্রজ আড়াই বৎসর শিক্ষা দিয়া, রাজকৃষ্ণ বাবুকে সিনিয়রের পরীক্ষাপ্রদানে, চতুর্দিক হইতে তাহাকে ধন্যবাদ দিতে লাগিল। কিরূপ প্রণালী অবলম্বনে শিক্ষা দিয়াছিলেন, তাহা পরিজ্ঞাত হইবার জন্য অনেকে অগ্রজ মহাশয়ের বাসায় সমুপস্থিত হইতেন। কলিকাতা তালতলা-নিবাসী ডাক্তার বাবু দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অগ্রজ মহাশয়ের পরমবন্ধু ছিলেন। পুর্ব্বে তিনি হেয়ার সাহেবের স্কুলের শিক্ষকের পদ পরিত্যাগপূর্ব্বক, মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা করেন। তিনি অসাধারণ ধীশক্তিসম্পন্ন ও চিকিৎসাবিদ্যায় সম্পূর্ণরূপ পারদর্শী ছিলেন। অগ্রজ মহাশয় কিছুদিন তাহার নিকট ইংরাজী শিক্ষা করিয়াছিলেন। উক্ত কৃতবিদ্য চিকিৎসক কলিকাতায় স্থায়ী হইলে, আত্মীয়বর্গের ও অন্যান্য সাধারণ লোকের সবিশেষ উপকার হইবে, এই মানসে, তাঁহাকে কলিকাতায় স্থায়ী করিবার নিমিত্ত অগ্রজের ঐকান্তিক ইচ্ছা হইয়াছিল। ইত্যবসরে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে অশীতিমুদ্রা বেতনের একটী হেড, রাইটারের পদ শূন্য হইলে, উক্ত ডাক্তারবাবুকে ঐ পদে নিযুক্ত করাইবার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ মার্শেল সাহেবকে অনুরোধ করেন। সাহেব, তদীয় অনুরোধের বশবর্তী হইয়া, দুর্গাচরণবাবুকে ঐ পদে নিযুক্ত করিয়া দেন।

 সংস্কৃত-কলেজের আসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারি রামমাণিক্য বিদ্যালঙ্কার মহাশয় পরলোক-যাত্রা করিলে পর, শিক্ষাসমাজের সেক্রেটারি ডাক্তার ময়েট সাহেব,