পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অক্ষয় দত্তের সহিত পরিচয়।
১২৩

সম্পাদক ছিলেন।[১] তত্ত্ববোধিনীর সহিত আনন্দকৃষ্ণ বসু প্রমুখ অন্যান্য অনেক “কৃতবিদ্যের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল। আনন্দকৃষ্ণ বাবুর মুখে শুনিয়াছি,—“বিদ্যাসাগর ও অক্ষয় বাবু উভয়েই রাজবাটীতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইংরেজি, অঙ্ক ও সাহিত্য পড়িতে যাইতেন। তাঁহারা ছাদের উপর বসিয়া খড়ি দিয়া, অঙ্ক পাতিয়া, জ্যামিতির প্রতিজ্ঞা পুরণ করিতেন। মাস পাঁচ ছয় পরে বিদ্যাসাগর অঙ্কবিদ্যা পরিত্যাগ করেন। ইহাতে তাঁহার প্রবৃত্তি ছিল না। অতঃপর তিনি সেক্সপীয়র পড়িতেন। ইহা শীঘ্রই আয়ত্ত্বও করিয়াছিলেন।”

 তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় যিনি যাহা লিখিতেন, আনন্দকৃষ্ণ বাবু প্রমুখ কৃতবিদ্য ব্যক্তিদিগকে তাহা দেখিয়া আবশ্যকমত, সংশোধনাদি করিয়া দিতে হইত। এক দিন বিদ্যাসাগর মহাশয় আনন্দ বাবুর বাড়ীতে বসিয়াছিলেন, এমন সময় অক্ষয়কুমার বাবুর একটা লেখা তথায় উপস্থিত হয়। আনন্দ বাবু বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অক্ষয়কুমার বাবুর লেখাটা পড়াইয় শুনাইয়া দেন। অক্ষয়কুমার বাবু পূর্ব্বে যে সব অনুবাদ করিতেন, তাহাতে কতকটা ইংরেজি ভাব থাকিত। বিদ্যাসাগর মহাশয় অক্ষয়কুমার

  1. কলিকাতা ব্রাহ্ম সমাজের মধ্যে ১৭৬১ শকে (১২৪৬ সালে) ৩রা কার্ত্তিকে তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। “১৭৬৫ শকের (১৮৪৩ খৃঃ) ভাদ্র মাস হইতে শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরপ্রভৃতির যত্নে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা নামে এক মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হইতে লাগিল। ইতিপূর্ব্বে অক্ষয় বাবু তত্ত্ববোধিনী সভার এক সত্যকার্য্যে ব্রতী হইয়া ১৭৭৭ শক পর্য্যন্ত ১২ বৎসর অবধি ঐ কার্য্য সম্পাদন করেন।” —শ্রীযুক্ত রামগতি ন্যায়রত্ন-কৃত “বাঙ্গালা সাহিত্য-বিষয়ক-প্রস্তাব।” ২৫৫ পৃষ্ঠা।