পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অক্ষয়কুমারের বৃত্তি।
১৩১

ষে, এই প্রতিজ্ঞার প্রতিলিপি অক্ষয়কুমার বাবুর নিকট প্রেরিত হয় এৰং সর্ব্বসাধারণের গোচরার্থ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকাতেও অবিকল মুদ্রিত হয়। (তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা, ১৭৯৭ শক, কার্ত্তিক মাস।)[১]

 তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার এই লিখিত অংশ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচিত। কেমন সুন্দর প্রাঞ্জল রচনা বল দেখি? বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টিপ্রারম্ভে এরূপ রচনা, রচয়িতার কৃতিত্বপরিচায়ক নহে কি? সাহিত্যের ইতিহাসে এই সর্ব্বাঙ্গপুষ্ট রচনার স্থান অতি উচ্চ নহে কি? এমন ভাষায়, যিনি প্রাণের এমন কৃতজ্ঞতা উচ্ছ্বসিত করিতে পারেন, তিনি প্রকৃতই বাঙ্গালা সাহিত্য-মন্দিরের জাগ্রত দেবতা নহেন কি? এই ভাষাকে আমরা “কৃতজ্ঞতার” ভাষা বলি, মনে হয়, এ ভাষা না হইলে বুঝি কৃতজ্ঞতার বিকাশ হয় না।

 সাহিত্যের সঙ্গে ধর্ম্মভাব বিজড়িত দেখিয়া এবং কোন কোন বিষয়ে দেবেন্দ্রনাথ বাবুর সহিত তাঁহার ঠিক মতমিল হইতেছে না বুঝিয়া, অক্ষয়কুমার দত্তের কিছু কাল পরেই বিদ্যাসাগর মহাশয় তত্ত্ববোধিনীর সম্পর্ক ত্যাগ করেন। দুই জন স্বাধীন-চেতা ও তেজস্বী পুরুষের মতসংঘর্ষে পরিণাম এরূপ হওয়া বিচিত্র নহে। চক্‌মকী পাথরের সঙ্গে ইস্পাতের সংঘর্ষণে অগ্নিফুলিঙ্গ নিঃসৃত হয়। এই কারণেই কেশবচন্দ্র সেনপ্রমুখ কয়েক ব্যক্তির সহিত ব্রাহ্মসমাজের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হইয়াছিল।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন বাসায় ইংরেজি শিথিতেন, তখন

  1. * শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রনাথ রায় বিদ্যানিধি প্রণীত “বাবু অক্ষয়কুমার দত্তের জীবনবৃত্তান্ত” ২৩৩ ও ২৩৪ পৃষ্ঠা।